উদয়পুর এবং অমরাবতীর দু'টি খুনের মধ্যেই মিল রয়েছে। রাজস্থানের উদয়পুরের হিন্দু দর্জির মতোই মহারাষ্ট্রের কেমিস্টও নুপুর শর্মার মন্তব্যে সমর্থন করাতেই টার্গেট হয়েছেন, এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশ। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের অমরাবতীর খুনের তদন্তের দায়িত্ব NIA-এর হাতে তুলে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত, এই খুনে সাম্প্রতিক যে দু'জনকে ধরা হয়েছে তাদেরই একজন মাস্টারমাইন্ড।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুয়ায়ী, হোয়াটসঅ্যাপে নুপুর শর্মাকে সমর্থন করে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন অমরাবতীর বছর চুয়ান্নর কেমিস্ট উমেশ প্রহ্লাদরাও কোলহে। সেই কারণেই কোলহেকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এর আগে এই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। শনিবার আরও দু'জনকে ধরে পুলিশ।
ধৃত ইরফান খান নামে ৩৫ বছরে এক যুবক একটি এনজিও চালান। ইরফানই এই খুনের মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি পুলিশের। ইরফানের পাশাপাশি পেশায় ভেটেরিনারি ডাক্তার ৪৪ বছরের ইউসুফ খানকেও এই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে নাগপুর থেকে ইরফানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে অমরাবতী থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ইউসুফকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ইরফান একটি এনজিও-র আহ্বায়ক। এনজিওটি "রাহেবর" নামে একটি হেল্পলাইন চালায়। এনজিও-র ফেসবুক পেজটি "অনগ্রসর শ্রেণির বিশেষভাবে সক্ষম (ডি) মানুষজনের পুনর্বাসনের জন্য" কাজ করে। ইরফানের গ্রেফতারি এই খুনের পিছনে বড় সাফল্য বলে মনে করছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। ইরফানই এই খুনে মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি পুলিশের। অমরাবতীর পুলিশ কমিশনার আরতি সিং বলেন, "আমরা ওর এনজিও-র ব্যাঙ্কিং লেনদেন পরীক্ষা করছি।"
আরও পড়ুন- কাশ্মীরের চিত্রসাংবাদিককে বিমানে উঠতে বাধা, যেতে দেওয়া হল না বিদেশে
পুলিশের দাবি, আগে গ্রেফতার হওয়া ৫ জনের মধ্যে অন্তত ৪ জন ইরফানের বন্ধু। ধৃতরা ইরফানের এনজিও-তে স্বেচ্ছায় কাজ করছিল। ইরফানই এই খুনের পরিকল্পনা করেছিল। সন্দেহভাজন ধৃতদের ইরফানই কাজ ভাগ করে দিয়েছিল। গাড়ি ও টাকার জোগানের মতো লজিস্টিক সহায়তাও ইরফানই তাদের দিয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ।
অন্যদিকে, অমরবাতীর খুনে ইরফানের পাশাপাশি ইউসুফ খান নামেও এক ভেটেরিনারি ডাক্তারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত ইউসুফ এই খুনে প্ররোচনা দিয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অরমাবতী পুলিশ প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ''ইউসুফ কোলহের বিরুদ্ধে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেছিল। কোলহে নুপুর শর্মাকে সমর্থন করে পোস্টগুলি প্রচার করছেন বলে অভিযুক্তদের উত্তেজিত করেছিল ইউসুফ। এরপরই তারা কোলহেকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। ইউসুফই অন্যদের উসকানি দিয়েছিল।''
ইউসুফকে ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। অমরাবতীর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিক্রম সালি বলেন, "নুপুর শর্মাকে সমর্থন করে তার (কোলহে) সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টের প্রতিশোধ নেওয়াই এই খুনের মূল উদ্দেশ্য ছিল।"