অদ্বৈত ভারতীয়াকে মনে আছে? সেই যে ৬ বছর বয়সে পৌঁছে গিয়েছিল এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে! অত ছোট বয়সে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের মত যথেষ্ট দুর্গম অভিযানে সফল হওয়া হাতে গোনা খুদে সদস্যদের মধ্যে অদ্বৈত অন্যতম। সে এখন ৯ বছরের। সদ্য ছুঁয়ে এসেছে আফ্রিকার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো শৃঙ্গ। আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো অভিযানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তার মা পায়েল ভারতীয়া এবং অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সমীর পাথাম। ৩১ জুলাই ১৮ হাজার ৪৫২ ফুট উচ্চতার শৃঙ্গ জয় করেছে আগস্টের প্রথমে দেশে ফিরেছেন অদ্বৈত এবং তাঁর দলের অন্যান্যরা। অ্যাডভেঞ্চার পালস নামের এক সংস্থার তরফে কিলিমাঞ্জারো অভিযানে বেরিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, বাংলার পর্বতারোহী দীপঙ্কর ঘোষকে মরণোত্তর সম্মান কেন্দ্রের
অত উচ্চতায় পর্বতারোহীরা কিন্তু অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে অভিযান চালিয়ে যান। উচ্চতা যত বাড়তে থাকে, বাতাসের ঘনত্ব কমে আসে, বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসে প্রায় ৫০ শতাংশ। সমুদ্রপৃষ্ঠে যে পরিমাণ অক্সিজেন থাকে ওই উচ্চতায় অক্সিজেন থাকে প্রায় অর্ধেক। বাতাসের তাপমাত্রা কমতে কমতে বেশিরভাগ সময় -২১ ডিগ্রি থেকে -২৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এই প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য অভিযান শুরুর মাস দুয়েক আগে থেকে নিজেকে কড়া অনুশাসনের মধ্যে দেখে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। নিয়মিত এক ঘণ্টা করে সাঁতার, কার্ডিওভাস্কুলার ট্রেনিং, ফুটবল খেলা, ক্রিকেট, টেনিস খেলা, ১০০ তলা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা নিয়মিত অভ্যাস করেছে সে। পুনেবাসী অদ্বৈত এবং তার মা কিলিমাঞ্জারো অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেরে এসেছেছেন লাদাখ ট্রেকিং এবং আরো কিছু ছোটখাটো কিছু ট্রেকিং, জানিয়েছে ভারতীয়া পরিবার।
"এই অভিযান কঠিন ছিল, কিন্তু আমি খুব মজাও পেয়েছি। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে আমরা একটা কাঠের ঘরে থাকতাম। কিন্তু কিলিমাঞ্জারোতে আমরা তাঁবুতে থেকেছি, ওটা দারুণ অভিজ্ঞতা, বাইরে বরফ ছিল চারপাশে। আরও তাড়াতাড়ি অভিযান সম্পূর্ণ করতে পারতাম। কিন্তু আশাপাশটা এত চমৎকার ছিল, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আমরা অনেকবার বিরতি নিয়েছিলাম। আগামী বছর রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রুস শৃঙ্গ জয়ের ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু এখন স্কুলে ফিরতে পেরে খুশি আমি", জানাল ৯ বছরের অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী অদ্বৈত"।
সামিটের ১০০০ ফুট নীচে উচ্চতাজনিত সমস্যায় ভুগেও অভিযান শেষ না করে ফিরে আসার কথা ভাবতেই পারেনি অদ্বৈত। এই কচি বয়সে ছেলের এমন অদম্য জেদ, এমন হার না মানার মানসিকতার জন্য গর্ব বোধ করছেন অদ্বৈতের মা পায়েলও।
Read the full story in English