নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসি দেওয়া নিয়ে জট যেন কাটছেই না। দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবার সুপ্রিম কোর্টে গেল কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার।এর আগে এদিন, নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসির আবেদনের কেন্দ্রীয় আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট। নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট। এই রায়কেই দিল্লি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন নির্ভয়ার বাবা-মা। কেন্দ্রও দোষীদের আলাদা আলাদা করে ফাঁসির দাবির আর্জি জানিয়েছিল। যা এদিন খারিজ করে দেওয়া হয়।
আদালত জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চার দোষীকে ফাঁসি খারিজের আরজি সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এক সপ্তাহ পরই শুরু হবে ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া।
হাইকোর্ট এই দিন জানিয়েছে, পৃথকভাবে নয়, যেহেতু নির্ভয়ার চার ধর্ষককে একই সঙ্গে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে। তাই একই সঙ্গে তাদের পরোয়ানা কার্যকর হতে পারে। বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত পর্যবেক্ষণে জানান, এটা অস্বীকার করা যায় না যে অপরাধটি হিংস্র, ভয়াবহ, হাড় হিম করে দিয়েছিল। একই সঙ্গে জাতির বিবেককেও টলিয়ে দিয়েছিল। ২০১৭ সালের মে মাসে নির্ভয়াকাণ্ডে চারজন দোষীর ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়। কিন্তু আড়াই বছর কেটে গেওয়া তা কার্যকর হয়নি। এর জন্য কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন বিচারপতি কাইত। '২০১৭ সালের মে মাস থেকে সব কর্তপক্ষ অপেক্ষমান ও ঘুমোচ্ছে' বলে মন্তব্য করেন বিচারক।
আরও পড়ুন: রামমন্দির ট্রাস্টকে ছাড়পত্র মোদী সরকারের
১লা ফেব্রুয়ারি ভোর ছ’টায় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডে দোষী পবন গুপ্তা (২৫), বিনয় শর্মা (২৬), অক্ষয় কুমার সিং (৩১) ও মুকেশ সিং (৩২)-এর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুত ছিল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আদালতের নির্দেশে পিছিয়ে যায় মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা। এরপর দোষীদের তরফে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন জানানো হলেও তা খারিজ হয়ে য়ায়।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে সিনেমা দেখে দিল্লিতে বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু। সেই সময় ফাঁকা বাসে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। তারপর একটি নির্জন রাস্তায় চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় তাঁদের। বহুক্ষণ পর রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। এই ঘটনায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলে ওঠে গোটা দেশে। গ্রেফতার করা হয় হয় অভিযুক্তদের। পরে বিচার চলাকালীন কারাগারেই আত্মহত্যা করে এক অভিযুক্ত। বছর সাতেক পর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু, একের পর এক অভিযুক্ত ফাঁসি খারিজ এবং প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করায় ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়নি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
Read the full story in English