Advertisment

একনজরে মোদীর করোনা আর্থিক প্যাকেজের কোন পর্যায়ে কত বরাদ্দ

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্যাকেজের থেকে বেশি আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন সীতারমন। মোট ২০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্যাকেজ তিনি ঘোষণা করেছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পাঁচ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ব্যাখ্যা দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্যাকেজের থেকে বেশি আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন তিনি। মোট ২০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্যাকেজ তিনি ঘোষণা করেছেন।

Advertisment

publive-image আর্থিক অঙ্কের হিসাব

প্রথম পর্যায়ে সীতারমন জানিয়েছিলেন যে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য এদিন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, ”ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য মোট ৬টি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই শিল্পে ঋণের জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৪ বছরের জন্য এই টাকা ঋণ দেওয়া হবে, এর মেয়াদ থাকবে ৩১ অক্টোবর, ২০২০ পর্যন্ত। এতে এক বছরের সুদ দিতে হবে না। ১০০ কোটি টাকার লেনদেন পর্যন্ত ২৫ কোটির ঋণ মিলবে। এতে উপকৃত হবে ৪৫ লক্ষ শিল্প ইউনিট”। এনপিএ (অনাদায়ী ঋণ)-এর চাপে কাবু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকেও ঋণ দেওয়া হবে। এই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হবে। এবার থেকে সরকারি কাজের ক্ষেত্রে ২০০ কোটি পর্যন্ত গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে না। অর্থাৎ ক্ষুদ্র-মাঝারি এবং অতি ক্ষুদ্র সহ দেশিয় সংস্থাগুলির কাজের ক্ষেত্র এর ফলে প্রসারিত হবে। য়া নিয়মে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রের বিনিয়োগ-লোনদেনের সীমা যথাক্রমে ১ কোটি-৫কোটি, ১০কোটি-৫০কোটি, ২০কোটি-১০০কোটি টাকা। ইপিএফ ১২ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ কাটা হবে। এছাড়াও ছিল, যাঁরা বেতনভোগী নন, তাঁদের হাতে যাতে বেশি নগদ থাকে, সে কারণে টিডিএস ও টিসিএস উভয় ক্ষেত্রেই বর্তমান হার থেকে ২৫ শতাংশ কম অর্থ কেটে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই সব মিলিয়ে আনুমানিক ব্যয়বরাদ্দ দেখানো হয় ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, পরিযায়ী শ্রমিকদের আগামী ২ মাস বিনামূল্য়ে খাদ্য়শস্য় দেওয়া হবে। রেশন কার্ড না থাকলেও খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। যাঁরা রেশন পান, তাঁরা মাসে আরও ৫ কেজি খাদ্যশস্য বিনামূল্যে পাবেন। ৫ কেজি চাল বা গমের সঙ্গে মিলবে এক কেজি ডাল। এতে ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হবেন। রাজ্য় সরকারকে এটা লাগু করতে হবে। এজন্য় ৩৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে সরকারের। সহজ শর্তে হকারদের ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। কৃষিক্ষেত্রে মার্চ-এপ্রিল মাসে ৬৩ লক্ষ ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। ৮৬ হাজার ৬০০ কোটির ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এইবের জন্য খরচ ধার্য হয় ৩ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা।

তৃতীয় পর্যায় সীতাররমনের ঘোষণা ছিল যে, কৃষি, দুধ, পশুপালন, মৎস্য কেন্দ্র সহ নানা ক্ষেত্রে একাধিক সহায়তা করবে কেন্দ্র। লকডাউনে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনায় কৃষকদের ১৮,৭০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেন তিনি। কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নে ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দহয়। এই প্যাকেজের আওতায় থাকবে হিমঘর, শস্য, গুদাম। কৃষিজাত পণ্যের বিক্রিতে নয়া আইন আনা হচ্ছে। যে কোনও জায়গায় কৃষকরা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা। এর ফলে আন্তঃরাজ্য় পণ্য পরিবহণে বাধা থাকবে না বলে ঘোষণা করেন সীতারামন।

কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য ১১ দফা প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু, তা দিয়ে কি সমস্যার সমাধান হবে? খতিয়ে দেখলে স্পষ্ট যে, ১১ প্রস্তাবের মধ্যে বেশ কয়েকটি ইতিমধ্যেই পেশ করা হয়েছিল, বাকিগুলি নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই সরকারিস্তরে আলোচনা চলছে।

এই ধাপে ঘোষিত সংস্কারের জন্য খরচ ধার্য হয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা।

চতুর্থ পর্যায়ে নির্মলা সীতারমন জানান যে, বেসরকারি সংস্থাকে কয়লা তোলার অনুমতি দেওয়া হবে। দেশে অস্ত্র উৎপাদনে জোর দেওয়া হবে। দেশে কিছু অস্ত্র তৈরি বাধ্যতামূলক করা হবে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রত্য়ক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করা হচ্ছে। এছাড়াও, বিনিয়োগে অনুকূল পরিবেশের জন্য় রাজ্যগুলির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই ধাপে ৮টি ক্ষেত্রের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। কয়লা, খনিজ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, বিদ্যুৎ বণ্টন, বিমান পরিষেবা, সৌর শক্তি, পারমাণবিক শক্তি, মহাকাশ ক্ষেত্রে নয়া ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারমন।

নুকূল পরিবেশের জন্য় রাজ্যগুলির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই ধাপে ৮টি ক্ষেত্রের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। কয়লা, খনিজ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, বিদ্য়ুৎ বণ্টন, বিমান পরিষেবা, সৌর শক্তি, পারমাণবিক শক্তি, মহাকাশ ক্ষেত্রে নয়া ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারমন।

পঞ্চম পর্যায়ে আজ সাতটি বিষয় ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা মত, এবার থেকে রাজ্যগুলি তাদের মোট আয়ের অতিরিক্ত ৪.২৮ লক্ষ কোটি ঋণ নিতে পারবে। আগে এর পরিমান ছিল ৩ শতাংশ। বর্তমানে তা বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। সীতারমনের কথায়, সরকারি ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণে সায় দেওয়া হতে পারে। সব জেলায় একটি করে সংক্রামক রোগ চিকিৎসা হাসপাতাল, হেল্থ ল্যাবরেটরি, নির্মাণের ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে দেউলিয়া ঘোষণা করার সীমা বর্তমানের ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি করা হয়েছে।

চতুর্থ ও পঞ্চ পর্ব মিলিয়ে ব্যায় বরাদ্দ হয়েছে ৪৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

সীতারামন ঘোষিত ২০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৮ লক্ষ ১ হাজার ৬০৩ কোটি টাকাও গরিব কল্যাণ সহায়তার ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Nirmala Sitharaman corona Lockdown
Advertisment