'অশ্লীল সিনেমা' দেখার জন্যই জম্মু-কাশ্মীরে ইন্টারনেটের ব্যবহার হয়ে থাকে। এই মন্তব্য নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে সারস্বতের। ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই উপত্যাকায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। যদিও আদালতের নির্দেশে বর্তমানে জরুরি স্থানগুলোতে ইন্টারনেটের সংযোগ চালু করা হয়েছে। ভূস্বর্গের সাধারণ মানুষ এখনও এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। এতদিন কেন বন্ধ ইন্টারনেট? এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই 'অশ্লীল সিনেমা'র প্রসঙ্গ টেনে আনেন সারস্বত। তাঁর মতে, অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ইন্টার বন্ধের বিষয়টি তেমন প্রভাব ফেলেনি।
গুজরাটের গান্ধীনগরে শনিবার ধীরুভাই আম্বানি ইন্সটিটিউট এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন নীতি আয়োগের সদস্য সারস্বত। সেখানেই তিনি বলেন, 'কেন রাজনীতিবিদরা কাশ্মীরে যেতে চান? দিল্লির সড়কে তারা যে আন্দোলন করছে তা তারা কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চান। সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে তারা আগুনে ঘি ঢালছেন। কাশ্মীরে ইন্টারনেটে কী দেখতে চান? ইন্টারনেটেই যেন সেখানে সব কিছুর বিচার চলছে। অশ্লীল সিনেমা দেখা ছাড়া আর কোনও কাজই সেখানে হয় না।'
আরও পড়ুন: অমিত ছায়ায় দল পরিচালনা করবেন নাড্ডা
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভি কে সারস্বত বলেন, 'কাশ্মীরে ইন্টারনেট না থাকলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে তার বড় কোনও প্রভাব পড়বে না।' তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, টেলিকম পরিষেবার মাধ্যমে অর্থনীতির সচলতা অনেকটা নির্ভর করে। তাহলে কেন উপত্যকায় বহু দিন ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নেট পরিষেবা। তারই উত্তরে এই তত্ত্ব খাড়া করেন নীতি আয়োগের এই সদস্য। তাঁর সংযোজন, 'কাশ্মীরের মতো গুজরাটেও কী ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে না? আসলে কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কারণ একেবারেই ভিন্ন। জানাই ছিল যে ৩৭০ ধারা রদের পর কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করবেন। যা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে প্রভাবিত করবে। তাই নেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।'
আরও পড়ুন: ‘সিএএ কার্যকর করব না বলাটা অসাংবিধানিক’, মত কংগ্রেসের কপিল সিবালের
বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্টেল ফির ১০ থেকে বেড়ে ৩০০ হয়েছে। প্রতিবাদে মুখর জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। গত কয়েকমাল ধরেই আন্দোলন করছেন তারা। এরই মধ্যে ৫ই জানুয়ারি জেএনিউয়ের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায় মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা। এপ্রসঙ্গে মুখ খোলেন নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে সারস্বত। তাঁর কথায়, 'জেএনইউ বর্তমানে রাজনীতির যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনের বদলে সেখানে যা হচ্ছে তা থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল। তবে সেসব দলের নাম আমি নিতে চাই না।' তার কথায় জেএনইউ বেশিরভাগ পড়ুয়াই বাম মনস্ক। বেশিরভাগ অধ্যাপক-অধ্যাপিকাও বাম মানসিকতার।
সমস্যার সমাধান গণতান্ত্রিক পথেই হওয়া উচিত বলে মনে করেন সারস্তব। ১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ৪৫ দিন জেএনিউ বন্ধ থাকার উদাহরণ টেনে তাঁর মন্তব্য, 'আমরা কোনও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে চাই না।' বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে উপাচার্য মামিডালা জগদেশ কুমারেরও ভূয়সী প্রসংশা করেন মোদী ঘনিষ্ট নীতি আয়োগের সদস্য।
এছাড়াও তিনি বলেন, 'জম্মু-কাশ্মীরে আন্দোলনের ফলে বহু কর্ম দিবস নষ্ট হয়েছে। জরুরি পরিষেবা থেকে ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ গত কয়েক মাস। ফলে রাজ্যের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। এখানে বাণিজ্য ভালো হলে তার প্রভাব জিডিপিতেও প্রতিফলিত হত। সব মিলিয়ে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধর্মঘট সত্ত্বেও সরকারের কর্মী, শিক্ষকরা সব সুবিধা পাচ্ছেন, অর্থ পাচ্ছেন। সরকার টাকা দিলেও তাতে লাভ হচ্ছে না। যার বিরূর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির উপর।'
Read the full story in English