নীতি আয়োগ টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে মাটিতে জৈব পদার্থ বাড়াতে গোমূত্র, গোবরের ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া, নীতি আয়োগ শুক্রবার "গোশালাগুলির অর্থনৈতিক কার্যকারিতা আরও উন্নত করার উপর বিশেষ নজর দেওয়ার পাশাপাশি জৈব সারের উৎপাদন, প্রচার এবং ব্যবহারের ওপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
নীতি আয়োগ টাস্ক ফোর্সের সদস্য, রমেশ চন্দ, উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক এবং গোশালাগুলির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গত ৫০ বছরে অজৈব সার ও গবাদি পশুর সার ব্যবহারে মারাত্মক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। এটি মাটির স্বাস্থ্য, খাদ্যের গুণাগুণ, দক্ষতা, পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।”
গোশালাগুলিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক করে তোলা কৃষি ও শক্তি সেক্টরে গোবর ও গোমূত্রের সঠিক ব্যবহার করার জন্য নীতি আয়োগ দ্বারা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। টাস্কফোর্স রিপোর্ট জৈব সারের ব্যবহারকে প্রচার করে বর্জ্য থেকে সম্পদ উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জৈব চাষ এবং প্রাকৃতিক চাষের দিক পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে, কৃষি কল্যান মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব,শ্রী প্রিয়া রঞ্জন, উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৩-এ প্রাকৃতিক চাষকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং টাস্কফোর্স রিপোর্টের সুপারিশ সেই ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করবে। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, 'নীতি আয়োগের এই রিপোর্ট গোশালাগুলিকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করে তুলতেও সাহায্য করবে'।
বায়ো-সিএনজি তৈরিতে গোবর ব্যবহার করতে চায় নীতি আয়োগ। পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি গবাদি পশু রয়েছে। অন্যদিকে, অন্য একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একটি গবাদি পশু একদিনে ১০ কেজি পর্যন্ত গোবর দেয়। ভারতকে একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
পশুপালন কৃষকদের বাড়তি আয়ের মাধ্যম হলেও এখন পশুর আবাসস্থল অর্থাৎ গোশালাও হয়ে উঠতে পারে কৃষকদের বাড়তি আয়ের প্রধান উৎস। সামগ্রিকভাবে, ভারত সরকার গোশালা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। যার অধীনে ভারত সরকারের নীতি আয়োগ ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু করে। এই গবেষণার লক্ষ্য হল গোবর থেকে আয় বাড়ানো।
পিটিআই রিপোর্ট অনুসারে, সম্প্রতি, নীতি আয়োগের সদস্য রমেশ চন্দের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দল রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশের কিছু অংশে অবস্থিত একাধিক গোশালা পরিদর্শন করেছে। প্রতিবেদনে রমেশ চাঁদকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে যে এই প্রকল্পের অধীনে বায়ো-সিএনজি তৈরিতে গোবর ব্যবহার করা যেতে পারে। বায়ো-সিএনজির সুবিধা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, 'এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। এমন পরিস্থিতিতে এই শক্তির উৎস ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, সে কারণেই আমরা এমন সম্ভাবনার কথা ভাবছি'।