বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মঙ্গলবার বিধানসভায় জানান যে তিনি তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির পাশাপাশি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি এবং অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের সীমা বাড়াতে চান। সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি এই সংরক্ষণ কার্যকর করতে চান। এই সংরক্ষণের বাইরে থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের লাগু করা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা। নীতীশ কুমারের সরকার ইতিমধ্যেই বিহারে জাত সমীক্ষার জন্য একটি কমিশন গঠন করেছিল। সেই কমিশনের দেওয়া বিশদ রিপোর্ট তিনি বিহার বিধানসভায় পেশও করেছেন। সেই ব্যাপারে বিতর্কেই বিহার বিধানসভায় বক্তব্য পেশ করছিলেন নীতীশ। তখনই তিনি 'পিছড়ে বর্গ'-এর জন্য সংরক্ষণের সীমা বাড়িয়ে ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তার মধ্যে এসসি এবং এসটিদের জন্য সংরক্ষণ ১৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তিনি ২২ শতাংশ করার কথা জানিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুযায়ী নীতীশ কুমার বলেছেন, 'আমরা যথাযথ পরামর্শের পরে প্রয়োজনীয় কাজ করব। বর্তমান অধিবেশনে এই পরিবর্তনগুলিকে কার্যকর করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ৫০% সংরক্ষণ ইতিমধ্যেই আছে। সেটাকে বাড়িয়ে ৬৫% করা উচিত। উচ্চবর্ণের জন্য তো ইতিমধ্যে ১০% (EWS) সংরক্ষণ আছেই। তাই মোট সংরক্ষণ ৭৫% হবে। সংরক্ষণ ছাড়া থাকবেন ২৫%। আগে সেটা ছিল ৪০%। এটাই আমার প্রস্তাব।'
আরও পড়ুন- ‘রশ্মিকা মান্দান্না’র ভিডিও ভাইরাল, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে এবার কড়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের
বিহার সরকারের তৈরি কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিহারে প্রতি তিনটির মধ্যে একটি দরিদ্র পরিবার রয়েছে। যাদের মাসিক আয় ৬,০০০ টাকা বা তার কম। বিধানসভায় সেই রিপোর্ট পেশ করেছেন বিহারের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী বিজয়কুমার চৌধুরী। নীতীশ সরকারের জাতি সমীক্ষার ফলাফল ২ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী, বিহারে ২.৯৭ কোটি পরিবার রয়েছে। যার মধ্যে ৯৪ লক্ষেরও বেশি বা ৩৪.১৩ শতাংশ দরিদ্র। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৫০ লক্ষেরও বেশি বিহারের ভূমিপুত্র জীবিকা এবং শিক্ষার সুযোগের সন্ধানে ভিনরাজ্যে বসবাস করছেন। এর মধ্যে যাঁরা ভিনরাজ্যে জীবিকা নির্বাহ করছেন, এমন বিহারবাসীর সংখ্যা ৪৬ লক্ষ। বিদেশে চলে গিয়েছেন ২.১৭ লক্ষ বিহারের ভূমিপুত্র। যাঁরা অন্যান্য রাজ্যে লেখাপড়া করছেন বিহারের এমন ভূমিপুত্রের সংখ্যা ৫.৫২ লক্ষ। আর ২৭,০০০ জন বিদেশে লেখাপড়া করতে গিয়েছেন।