Jammu and Kashmir: গত কয়েকদিনে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত একাধিক ভিন রাজ্যের শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ বিহারের বাসিন্দা। খুঁজে খুঁজে ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের হত্যার নিন্দায় সরব হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এভাবে বিহারী শ্রমিকদের হত্যায় একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এভাবেই সরব হয়েছিলেন নীতীশ কুমার।
তাঁর আশ্বাস, ‘তিনি জম্মু-কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা এবং অন্য সচিবদের সঙ্গে কথা বলেছেন।‘ তাঁর মন্তব্য, ‘এটা গভীর উদ্বেগের বিষয় যখন কর্মসূত্রে কাশ্মীরে যাওয়া শ্রমিকরা জঙ্গি নাশকতার শিকার। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবিলম্বে কড়া হাতে এই আগ্রাসন দমন করা উচিত।
এদিকে, ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ে ৪ জন ভিন রাজ্যের শ্রমিক কাশ্মীরে জঙ্গি নাশকতার শিকার। রবিবার কুলগামে দুই জনকে হত্যা করে সন্ত্রাসবাদীরা। এই হামলায় আহত এক। জানা গিয়েছে, নিহতেরা ভিন রাজ্য থেকে কর্মসুত্রে কুলগামের ওয়ানপো এলাকায় থাকতেন।
পুলিশ সুত্রে খবর, ওই শ্রমিকদের ভাড়া বাড়িতে ঢুকে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়তে থাকে জঙ্গিরা। তাতেই দু’জনের মৃত্যু হয়, একজন রক্তাক্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। শনিবারও একইভাবে ভিন রাজ্যের দুই শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে একজন ফুচকা বিক্রেতা, অপরজন কাঠমিস্ত্রী।
এভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যার তীব্র নিন্দা করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল। তিনি বলেছেন, প্রত্যেক রক্তবিন্দুর বদলা নেওয়া হবে। নিরীহদের উপর জঙ্গি হামলা আদতে রাজ্যের উন্নয়ন থমকে দেওয়ার চাল। শান্তি, স্থিতি বিঘ্ন করে আর্থ-সামাজিক বৃদ্ধিকে রোধ করাই সন্ত্রাসবাদীদের উপলক্ষ্য।
এদিকে, জম্মু কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে জঙ্গি-দমন অভিযান জারি। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী জেলা পুঞ্চের জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের নির্মূল করার অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ফের জঙ্গিদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই শুরুর পর থেকে চার সেনাকর্মী নিখোঁজ ছিলেন। বিম্বার গালি-সুরানকোট রাস্তার পাশে ভাটা দুরিয়ান গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে চলছিল গুলির লড়াই। শুক্রবার রাইফেলম্যান বিক্রম সিং নেগি এবং যোগম্বর সিংয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সুবেদার অজয় সিং এবং নায়েক হরেন্দ্র সিংয়ের দেহ শনিবার সন্ধ্যায় মেনধর এলাকার নরখাস জঙ্গলে পাওয়া যায়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দ্র আনন্দ জানিয়েছেন, শনিবার যে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সুবেদার অজয় সিং এবং নায়েক হরেন্দ্র সিং। নিহত এই দুই সেনা সদস্যও জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি দমন অভিযানে সামিল ছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আরও বলেন, “জঙ্গিদের পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করতে এবং সেনার বাকি সদস্যদের সঙ্গে ফের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য নিরলস অভিযান অব্যাহত ছিল। সুবেদার অজয় সিং এবং নায়েক হরেন্দ্র সিং মারাত্মক লড়াইয়ে নিহত হন। শনিবার সন্ধেয় তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।”
সেনাকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার রাজৌরি জেলা লাগোয়া পুঞ্চের চামরেদ এবং সংলগ্ন পানগাই জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় জঙ্গিদের। সেই লড়াইয়ে একজন জেসিও (জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার) এবং চার জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। ওই জঙ্গিরা যে গোষ্ঠীর সদস্য ছিল সেই একই গোষ্ঠীর জঙ্গি লুকিয়ে পুঞ্চের জঙ্গলে। এর আগে শেষ বার পুঞ্চে সেনার উপর বড়সড় হামলা ঘটেছিল ২০০৪ সালে। সেবার সুরঙ্কোট এলাকার খোলেয়ানওয়ালিতে টহল দিচ্ছিল সেনা। অতর্কিতে আক্রমণ করে জঙ্গিরা। সেই হামলায় চার সেনা নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছিলেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন