হাতে নগদ নয়, পরিযায়ী শ্রমিকরা আগামী দু'মাস নিখরচার রেশন থেকে চাল, ডাল পাবেন। কার্ড না-থাকলেও মিলবে সুবিধা। লকডাউনে চরম দুর্দশাগ্রস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আপাতত এই সহায়তার বন্দোবস্ত করেছে মোদী সরকার। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই প্যাকেজের দ্বিতীয় কিস্তির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পরিযায়ীদের এই সুবিধাদানের কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
গত দু'মাস ধরে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ নেই। ফলে হাতে নগদও নেই। এই অবস্থায় চরম দুর্দশায় দিন কাটছে তাঁদের। এই আবস্থায় পরিযায়ীদের হাতে নগদ যোগানের পরামর্শ দিয়েছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক বিশিষ্ট্য অর্থনীতিবিদ। কিন্তু সেই পরামর্শ মানা হল না। উল্টে নিখরচায় রেশনের কথা বলা হল। এখন প্রশ্ন এই পরিস্থিতিতে গরিব শ্রমিকরা হাতে নগদ না মিললে কীভাবে অর্থনীতির নিয়ম মেনে দেশে চাহিদা তৈরি হবে, অর্থনীতি সচল থাকবে।
প্যাকেজের বিশদ ব্যাখ্যার প্রথম দিন লক্ষ্য ছিল ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং মধ্যবিত্ত। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে পরিযায়ী শ্রমিক, গরিব, কৃষক, ফুটপাতের ব্যবসায়ী ও হকারদের জন্য মোট ৯টি পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সীতারামন জানান, বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য ইতিমধ্যেই গরিব কল্যাণ যোজনায় ৬ মাসের খাদ্যসামগ্রী রেশন থেকে বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রতি মাসে মাথাপিছু ৫ কেজি চাল বা গম এবং এক কেজি করে ডাল দেওয়া হচ্ছে। আগামী ২ মাস এই সুবিধা পাবেন দেশের প্রায় ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকরাও। রেশন কার্ড না থাকলেও মিলবে সুবিধা। এতে প্রায় ৩,৫০০ কোটি খরচ হবে বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন- ২০ লক্ষ কোটি প্যাকেজের দ্বিতীয় পর্যায়: পরিযায়ীদের বিনামূল্যে রেশন, কৃষক-হকারদের ঋণ
লকডাউনে একশ দিনের কাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে পরিযায়ীদের বেশি করে কাজে লাগানোর বিষয়ে রাজ্যগুলিকে জানিয়েছে কেন্দ্র। চলতি অর্থবর্ষের এই প্রকল্পে প্রথম তিন মাসের বরাদ্দকৃত অর্থও রাজ্যগুলিকে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে মোদী সরকার। ফলে পরিযায়ীদের নগদজনিত অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বলেই মনে করেছে কেন্দ্র।
ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বেশি টাকায় ভাড়া থাকা- পরিযায়ী শ্রমিকদের অন্যতম সমস্যা। এক্ষেত্রে কিছুটা সুরাহা দিতে এ বার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো প্রকল্পে সরকার বাড়ি তৈরি করবে। সেই সব বাড়িতে অল্প ভাড়ায় থাকতে পারবেন শ্রমিকরা। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এই সব বাড়ি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন