পেগাসাস মামলায় নয়া মোড়। পেগাসাস তদন্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যে ২৯টি ফোন পরীক্ষা করা হয়েছিল তার মধ্যে পাঁচটিতে ম্যালওয়ারেরের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তবে তা পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনা তার কোনও যুৎসই প্রমাণ মেলেনি।
প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পেগাসাস তদন্তে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের সবটা নয়, কিছুটা প্রকাশ করা হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখতেই বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট সম্পূর্ণটা প্রকাশ করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এ দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানার নেতৃত্বাধীন বিচারপতি সর্যকান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ কমিটিকে পেগাসাস তদন্তে কোনও সহায়তা করেনি কেন্দ্র। কমিটির রিপোর্টেই এই অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের জন্য পেগাসাস মামলা মুলতবি রাখা হয়েছে।
২০২১ সালের সালের জুলাই মাসে বিশ্বব্য়াপী অনুসন্ধামূলকতদন্তে উঠে আসে যে, পেগাসাস, একটি শক্তিশালী স্পাইওয়্যার যা ইসরায়েলি সাইবারসিকিউরিটি কোম্পানি এনএসও গ্রুপ দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সেই পেগাসাস স্পাইওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে ভারত সহ বেশ কয়েকটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের প্রতিষ্ঠিত একাধিক ব্যক্তির মোবাইলে আড়িপাতা হয়েছে।
এই তালিকায় ছিল মোদী সরকারের অন্তত দু'জন মন্ত্রী, বিরোধী দলের তিন নেতা, একজন সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, ব্যবসাসী, বিচারপতি ও সমাজিক আন্দোলনের কর্মী। পেগাসাস আড়িপাতার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল হইচই পড়ে যায়। মোদী সরকারকে নিশানানা করে বিরোধী দলগুলি। কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া কীভাবে বিদেশি স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়িপাতা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তাহানি ও ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে দাবি অভিযোগ ওঠে। যদিও কেন্দ্র আড়িপাততে পেগাসাসের অনুমতির অভিযোগ নস্যাৎ করেছিল।
কিন্তু, এই বিষয়ে কোনও তথ্য সরবরাহ করতেও অস্বীকার করে কেন্দ্র।
এরপর মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় সরকার বা কোনও রাজ্য সরকার পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে কিনা তার তদন্তে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর ভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে তৈরি কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অলোক জোশী এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সন্দীপ ওবেরয়। প্রযুক্তিগত দিকগুলি খতিয়ে দেখতে আরও তিন জন প্রযুক্তিবিদকে নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য করা হয়। কয়েক মাস আগে সুপ্রিম কোর্টে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এ দিন সুপ্রিম কোর্টের চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ এসেছে।