ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যকে মাথায় রেখে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি (NRC) নিয়ে পিছু হটল মোদী সরকার। দেশব্যাপী এনআরসি লাগুর এখনও কোনও বড় সিদ্ধান্ত হয়নি। বুধবার সংসদকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। রাজ্য সভায় ওঠা এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি কোনও সিদ্ধান্ত মন্ত্রক নেয়নি।‘ ২০১৯ সালে অসম জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এই কাজ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হয়েছিল এনআরসি তালিকা। তালিকা থেকে প্রায় প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছিল। মোট আবেদন জমা পড়েছিল ৩,৩০, ২৭, ৬৬১ জনের। এই পদ্ধতির জেরে অসমব্যাপী গণপ্রতিবাদ তৈরি হয়েছিল। যার ঝড় আছড়ে পড়েছিল গোটা দেশে।
এনআরসি মানে, দেশের কতজন নাগরিক অসমে বসবাস করে তার তালিকা। যদিও সেই তালিকা বের হওয়ার পর থেকে অসমে একটা বিজেপি-বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে। তাই মাস ঘুরলেই সেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এনআরসি বা সিএএ-র আঁচ যাতে ভোটবাক্সে না পড়ে। তাই এই বড় ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংসদে করল। এমনটাই বিরোধী শিবিরের দাবি।
এদিকে, কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে শিরোমণি অকালি দল। এবার নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ (CAA) নিয়ে সংঘাতের পথে যেতে পারে বিজেপির অপর এক শরিক এআইএডিএমকে। আগামি বিধানসভা নির্বাচনে ফের ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রকে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের আবেদন করবে আম্মার দল। এমনটাই ভোটের প্রচারে ঘোষণা করেছে তামিলনাড়ুর শাসক দল।
সোমবার দলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কে পালনীস্বামী। সেই ইস্তেহারে সিএ আইন নিয়ে বিরুদ্ধ মতের প্রসঙ্গ উল্লেখ আছে। পাশাপাশি তামিলনাড়ুর উদ্বাস্তু শিবিরে থাকা তামিলদের নাগরিক্ত্ব-সহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। রয়েছে ফ্রি ওয়াশিং মেশিন আর সোলার স্টোভ বিলির প্রতিশ্রুতি। সরকারি চাকরি নেই এমন পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি দফতরে নিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে আম্মার দল।
পাশাপাশি পেট্রোপণ্যের মুল্যবৃদ্ধিতেও ভুমিকা নেবে এআইডিএমকে। এমনটাই ইস্তেহারে উল্লেখ। এদিকে, এই ইস্তেহার প্রসঙ্গে সেই রাজ্যের বিরোধী দল ডিএমকে বলেছে, ‘দ্বিচারিতা করে মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে এআইডিএমকে। যদি রাজ্যের শাসক দল তিন বছর আগে রাজ্য সভায় এই সিএ বিলের পক্ষে ভোট না দিত, তবে সেটা আইনে রূপান্তরিত হত না। কীভাবে এআইডিএমকে এই ধরনের ঘোষণা করে? ওরা কি রাজ্যের মানুষকে বোকা ভাবে?