হিন্দু দেবদেবীরা উচ্চবর্ণের নয়, তাঁরা ব্রাহ্মণ নয় মোটেই। কেন্দ্রীয় সামাজিক বিচার এবং সশক্তিকরণ মন্ত্রকের আয়োজিত বক্তৃতা অনুষ্ঠানে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধুলিপুডি পণ্ডিত। বি আর আম্বেদকর লেকটার সিরিজে তিনি এই বক্তব্য রাখেন।
বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে পণ্ডিত বলেন, "আম্বেদকর আমাদের লিঙ্গসাম্য শিখিয়েছেন। পুরাণ হোক বা বিজ্ঞান, দয়া করে আমাদের দেবদেবীর উৎস দেখুন। কোনও ঈশ্বরই ব্রাহ্মণ নন। সবচেয়ে বেশি ক্ষত্রিয়। ভগবান শিব অবশ্যই একজন তফসিলি জাতি বা উপজাতির লোক। কারণ তিনি শ্মশানে বসে থাকেন সাপ নিয়ে। তাঁকে খুব কম কাপড় দেওয়া হয়েছে পরনে। আমার মনে হয় না ব্রাহ্মণরা এত কম কাপড় পরে শ্মশানে বসে থাকবেন। ভাল করে দেখতে দেখতে পাবেন, পুরাণ অনুযায়ী, উচ্চবর্ণের থেকে আসেননি দেবদেবীরা। এমনকী লক্ষ্মী, শক্তি, সমস্ত দেবতারা। যদি জগন্নাথকে ধরেন, খব বেশি হলে আদিবাসী। তাই যদি আমরা এমনই বৈষম্য নিয়ে পড়ে থাকি, তাহলে তা খুব অমানবিক হবে।"
জেএনইউয়ের উপাচার্য আরও বলেছেন, "মনুস্মৃতিতে সমস্ত মহিলাকে শূদ্র হিসাবে দেখানো হয়েছে। যা একপ্রকার অত্যন্ত নিন্দনীয়। সমস্ত মহিলারা মনুস্মৃতি অনুযায়ী, শূদ্র। কোনও মহিলাই তাই নিজেকে ব্রাহ্মণ হিসাবে দাবি করতে পারবেন না। আমি মনে করি, একমাত্র বিয়ের পর স্বামীর জাত গ্রহণ করতে পারবেন। যা আমার মনে অত্যন্ত খারাপ।"
আরও পড়ুন বিলকিস বানো মামলা: দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম চ্যালেঞ্জ, কী জানালেন প্রধান বিচারপতি?
সোমবারই নিজের বক্তব্যে, পণ্ডিত সম্প্রতি রাজস্থানে এক ৯ বছরের দলিত শিশুর উচ্চবর্ণের শিক্ষকের প্রহারে মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি বলেছেন, "দুর্ভাগ্যবশত, বর্ণ জন্ম অনুযায়ী হয় না। কিন্তু আজকের দিনে সেটা জন্ম অনুযায়ী হয়। যদি ব্রাহ্মণ বা অন্য কোনও বর্ণের মানুষ পেশায় মুচি হন তাহলে কি তিনি দলিত হবেন? হবেন না। আমি বলছি কারণ সম্প্রতি রাজস্থানে এক দলিত শিশুকে মারধরে করে প্রাণ নিয়ে নেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র সে জলের হাঁড়িতে হাত দিয়েছিল। খায়ওনি। এটা বোঝার চেষ্টা করুন, এটা মানবাধিকারের প্রশ্ন। কোনও মানুষের সঙ্গে এমনটা করা যায়?"