২০১৫ সালের গণধর্ষণ মামলায় এক অভিযুক্তকে খালাস করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চণ্ডীগড় প্রশাসনের আবেদন নাকচ করে দিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। আদালত তাদের রায়ের সপক্ষে বলেছে, ধর্ষিতার দেহে যেহেতু ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়নি, এ ঘটনা সম্মতিক্রমে যৌনমিলনও হতে পারে।
ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বিচারপতি জসওয়ন্ত সিং ও ললিত বাত্রা বলেছেন, "এ মামলায় অভিযোগকারিণীকে অপহরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই আমরা মনে করছি। অভিযোগকারীদের কৌঁশুলিরা নিম্ন আদালতে যে মামলা সাজিয়েছেন তা অতীব অসম্ভব। অভিযুক্তদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য।"
আরও পড়ুন, কমলেশ তিওয়ারি হত্যার নেপথ্যে ‘যড়যন্ত্র’, দাবি পরিবারের
ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, "চিকিৎসক অভিযোগকারিণীর শরীরে কোনও ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাননি, যা থেকে এ কথা মনে করাই যায় যে তাঁর সম্মতিক্রমেই যৌনতার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগকারিণী যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন, তার সমর্থনে কোনও প্রমাণও মেলেনি। তাঁর বয়ান বিশ্বাসযোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ করেনি, এবং এই পরিস্থিতিতে আমরা অভিযুক্তকে বেনিফিট অফ ডাউট দিচ্ছি।"
পুলিশের কাছে অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর রাতে তাঁর মেয়ে জাগরণ শুনতে গিয়েছিল, কিন্তু সকাল অবধি সে ফেরেনি। অভিযোগ, অমিত, সুরজ, কান্নু এবং বিকাশ তাকে একটি গাড়ির মধ্যে অপহরণ করে আটকে রেখেছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা করা হয়। বিচারের সময়ে অমিত জানায় মেয়েটির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল, এবং সে কারণেই মেয়েটির অভিভাবক তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাচ্ছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে নিম্ন আদালতে সমস্ত অভিযোগ থেকে অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়া হয়। মেয়েটির বাবা যখন এ মামলা দায়ের করেন, তখন মেয়েটির বয়স ছিল ১৮।
ডিভিশন বেঞ্চ আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, "জাগরণের ভিড় থেকে কী করে অভযুক্ত মেয়েটিকে অপহরণ করল সে কথা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি অভিযোগকারীরা। জাগরণ রাত ১১টা-১২টা নাগাদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, একথাও বলা হয়নি। মেয়েটি তাহলে জাগরণ শেষ হওয়া পর্যন্ত সেখানে ছিল বলেই ধরে নেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে মেয়েটি কী করে অভিযুক্তের সঙ্গে এল এবং কীভাবেই বা অভিযুক্ত ছুরি বের করে তাকে অপহরণ করল, তা স্পষ্ট নয়।"
মেয়েটি তার বয়ানে জানিয়েছিল, তাকে দু দিন ধরে একটি ঝুপড়িতে আটক রাখা হয়েছিল। আদালত বলেছে, এরকম ভাবে আটকে রাখলে তার চিৎকার চেঁচামেচি করার কথা। আদালত বলেছে, "অভিযোগকারীরা এমন কথা বলেনি যে মেয়েটিকে নেশার দ্রব্য দিয়ে বেহুঁশ করে রাখা হয়েছিল, যার জন্যে সে চিৎকার করার মত অবস্থায় ছিল না। ফলে, নেশার দ্রব্য না দেওয়ায় দুদিন ধরে জোর করে একটি বাড়িতে ধরে রাখলে তার চিৎকার চেঁচামেচি করার কথা।"
Read the Full Story in English