ঠিক কী হয়েছিল ছেলের? কেন এমন হল? করোনাতেই মৃত্যু? এর কোনও প্রশ্নেরই উত্তর নেই তাঁর মায়ের কাছে। বুধবার দিল্লির সফদরগঞ্জ হাসপাতালে বছর তেইশের যুবকের আত্মঘাতী মৃত্যুতে প্রশ্ন তুলল পরিবার। পাঞ্জাবের একটি গ্রাম থেকে উঠে আসা এই যুবক সিডনিতে একটি পিজ্জা সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করত। চার মাস আগে ছেলের কাছেই গিয়েছিলেন মা। কিন্তু ফেরার পর এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারে এমনটা বোধহয় কল্পনাও করতে পারেনি ওই যুবকের পরিবার।
সিডনি থেকে ফেরত এসেই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে সফদরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে। আসলেই তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। যুবকের মা জানিয়েছে যে ফ্লাইট থেকে নামার পর ওই যুবকের বেশ কিছু সময় মাথাব্যথা ছিল। এরপরই তাঁকে নিয়ে যায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। '
ওই যুবকের কাকা জানিয়েছে যে যুবকের মায়ের হাতে ছিল একটাই স্লিপ, যেখানে লেখা ছিল সফদরগঞ্জের কথা। যুবকের কাকা জানান দিল্লির এই হাসপাতালে গেলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ কোনওরকম কথা বলতে রাজি হননি। তাঁর কাকা বলেন, "হাসপাতালের স্টাফ মেম্বারকে বলতে শুনেছি যে যুবককে আরএমএল হাসপাতালে নিয়ে যেতে হত। সফদরগঞ্জ হাসপাতালের লিস্টে তাঁর নাম নেই।"
এক নি:শ্বাসে যুবকের কাকা জানান "আমরা যখন সেখানে যাই দেখি মিডিয়ার লোক জড়ো হয়ে বলাবলি করছে কেউ একজন হাসপাতালের সাত তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। দেখলাম রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা শরীর। পুলিশ তখনও এসে পৌঁছয়নি। কিন্তু আমরা একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। হাসপাতালে যখন জিজ্ঞেস করি ওরা কোনও কিচ্ছু বলেনি। এরপর যখন সামনে গেলাম দেখলাম ও পড়ে আছে।" তিনি জানান, পুলিশ কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেউ নিশ্চিত করেনি। রাত ১২টায় ডাক্তার আসে, কিন্তু নিশ্চিত করে কিছুই জানায়নি।
কিন্তু ভাইপোর এমন খবর যুবকের মায়ের কাছে জানাতে পারেননি শোকস্তব্ধ কাকা। যুবকের বাবার একটি ব্যবসা রয়েছে, ভাই ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র। বুধবার যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয়, তখন শূন্য দুয়ারে দাঁড়িয়ে যুবকের মা। জলে ভিজে যাচ্ছে চোখের কোল।
Read the story in English