ভোট এলেই রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিশ্রুতির বান ডাকে। যেন জিতলেই আলিবাবার খাজানা নিয়ে বসে। এই দেবে, সেই দেবে। এমনকী, যা চাওয়া হয়নি, তা-ও দেবে। আর, ভোট ফুরোলেই স্রেফ ফাঁকি দেবে। এটা এখন এদেশের বাচ্চারাও জেনে গেছে। নানা চেষ্টা করেছে। কিন্তু, লাভের লাভ কিছুই হয়নি। এবার তাই নির্বাচন কমিশনেরও ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি অবস্থা।
সুপ্রিম কোর্ট এনিয়ে ডাকতেই হাত তুলে দিল কমিশন। জানাল, এ সামলানো তার হাতেরও বাইরে। এনিয়ে আদালতে হলফনামাও জমা দিয়েছে কমিশন। তাতে জানিয়েছে, এই সব প্রতিশ্রুতি দেওয়া দলগুলোর নিজস্ব ব্যাপার। আর, সেই সব প্রতিশ্রুতিতে তাদের ভালো হবে না, খারাপ হবে সেটা ভোটারদের বিবেচ্য বিষয়। এখানে কমিশনের কিছুই করার নেই। নির্বাচন কমিশন রাজ্য বা কেন্দ্রের নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এটা শাসকদলের ব্যাপার। আর, বেআইনিভাবে যদি কমিশন তা করতে যায়, তবে সেটা ক্ষমতার অপব্যবহার হয়ে যাবে।
আদালতে এই জনস্বার্থ মামলাটি করেছে আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, অবিবেচকের মতো বিনামূল্যে কোনও সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সরকারকে যেমন আর্থিক দুর্দশায় ফেলে। তেমনই, তা নির্বাচনে ভোটারদেরও প্রভাবিত করে। স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচনেও বাধা দেয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুদ্ধতা নষ্ট করে। এই ধরনের প্রতিশ্রুতি বা বিতরণ ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে ঘুষ এবং অযাচিত প্রভাবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
এই নির্দেশ দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন আবেদনকারী। এই ব্যাপারে বক্তব্য জানাতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে সুব্রমনিয়ান বালাজি বনাম তামিলনাড়ু সরকারের মামলার কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে এটা বলা হয়েছিল যে একটি নির্বাচনী ইস্তাহারে থাকা প্রতিশ্রুতি ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী ঘুষ বা দুর্নীতির হতে পারে না।
শীর্ষ আদালত সেখানে বলেছিল যে কমিশন কেবলমাত্র সেখানেই হস্তক্ষেপ করতে পারবে, যেখানে বিষয়গুলি বেআইনিভাবে হচ্ছে। অথবা, যে বিষয়ে কোনও আইন নেই। পাশাপাশি, ইস্তাহারের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশিকা তৈরি করতেও নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ, এজন্যও কোনও আইন নেই।
Read story in English