Advertisment

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার প্রমাণ নেই, জানাল পুলিশ

পুলিশ কেন তৎক্ষণাৎ দেশদ্রোহিতার অভিযোগ গ্রহণ করল এবং দু'দিন পর একথা বলছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কুলহরি বলেন, "দেশদ্রোহিতার অভিযোগ যখন ওঠে, তখন আমরা এফআইআর গ্রহণ করতে বাধ্য হই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ জানিয়েছে, ৮ ছাত্রকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তদন্ত জারি রয়েছে। এক্সপ্রেস ফটো: অমিত মেহরা।

আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) ধৃত ছাত্রদের বিরুদ্ধে 'দেশদ্রোহিতার উপযুক্ত প্রমাণ নেই', আটকের দু'দিন পর জানাল পুলিশ। ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি খতিয়ে দেখার পরই এ কথা জানাল প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, 'তদন্ত আরও এগোলে' এই অভিযোগ 'হয়ত বাদ পড়তে পারে'। বিজেপি-র যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার আলিগড় ইউনিটের সভাপতি মুকেশ লোধির অভিযোগ, ১২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' এবং 'ভারত মুর্দাবাদ' স্লোগান তোলা হয়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র সংসদের পদাধিকারী-সহ মোট ১৪ জনকে আটক করে পুলিশ

Advertisment

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে আলিগড়ের এসএসপি আকাশ কুলহরি বলেন, "এই ঘটনায় দেশদ্রোহিতার কোনও উপযুক্ত প্রমাণ মেলেনি। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অশান্তিতে যুক্ত এমন মোট ১৭ জনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। এদের মধ্যে ৫ জন বহিরাগত। এই নামগুলির তালিকা এবং এ ঘটনায় জমা পড়া মোট ১৫টি অভিযোগ আমরা এএমইউ কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দিয়েছি"। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে অন্তর্তদন্ত করার পর সবক'টি অভিযোগ একত্র করে একটি এফআইআর দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন এই পুলিশ আধিকারিক।

আরও পড়ুন- সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহিতা নয়

পুলিশ কেন তৎক্ষণাৎ দেশদ্রোহিতার অভিযোগ গ্রহণ করল এবং দু'দিন পর একথা বলছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কুলহরি বলেন, "দেশদ্রোহিতার অভিযোগ যখন ওঠে, তখন আমরা এফআইআর গ্রহণ করতে বাধ্য হই। তবে, এই ঘটনায় মোট ১৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু তা বলে তো আর ১৫টি এফআইআর দায়ের করা যায় না, সে কথা আমরা এএমইউ-কে জানিয়েও দিয়েছি। আমরা সুপারিশ করেছি, অভিযুক্তদের রাষ্ট্রিকেট করা হোক"।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ জানিয়েছে, ৮ ছাত্রকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তদন্ত জারি রয়েছে। এএমইউ-এর জনসংযোগ আধিকারিক ওমর পিরজাদা বলেন, "পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দেশ গড়ার কাজে দায়বদ্ধ..."।

আরও পড়ুন- পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার ভারতের

একাধিক আধিকারিকদের থেকে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবারের ঘটনা আসলে দীর্ঘ ঘটনা পরম্পরার চূড়ান্ত পরিণতি। সোমবার রাতে একই হোস্টেলের দুই বিটেক ছাত্রের মধ্যে মারামারি হয়। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সোশাল সায়েন্স বিভাগের কনফারেন্স হলে একটি আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল এআইএমআইএম সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়েইসির। সেই অনুষ্ঠানের খবর করতে আসে রিপাবলিক টিভি-র প্রতিনিধিরা। এরপর রিপাবলিক টিভির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন।

জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে উত্তাপ বাড়ছিল। মুকেশ লোধি এবং বারাউলির বিজেপি বিধায়ক দলবীর সিং-এর নাতি অজয় সিং বিশ্বাবিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি মন্দির গড়বে বলে দাবি জানায়। এই ইস্যুটিকে সামনে রেখে ২২ জানুয়ারি তিরঙ্গা মিছিল করার পরিকল্পনা করেন অজয় সিং। কিন্তু, শিক্ষাদিবসে মিছিলের অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ফলে তা ব্যর্থ হয়। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে অজয় সিং বলেন, "হিন্দু ছাত্রদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মন্দির নির্মাণের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডের যোগ নেই"।

আরও পড়ুন- দিল্লিতে লুকিয়ে দুই জইশ জঙ্গি! জারি সতর্কতা

উল্লেখ্য, অজয় সিং এর আগে এএমইউ-এর ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম সংগঠনের জমায়েতের প্রতিবাদ করে তিনি একটি বিক্ষোভ মিছিলও সংগঠিত করেন। অজয়ের অভিযোগ, তাঁদের এক সহকর্মীকে মারধরও করা হয়েছে। এদিকে, লোধি বলেছেন, ওই জমায়েত ছিল জঙ্গিবাদের সমর্থকদের জমায়েত।

Advertisment