Advertisment

এনকাউন্টার নিয়ে ‘আষাঢ়ে গল্প’ ফাঁদছে যোগী পুলিশ? উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি

এনকাউন্টার নিয়ে রয়ে গিয়েছে হাজারো প্রশ্ন, উচ্চপর্যায় তদন্তের দাবি বিরোধীদের

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Atiq Ahmed's son, Atiq Ahmed, Asad encounter, UP Police in Jhansi, Atiq Ahmed son killed, Atiq Ahmed son killed encounter, Umesh Pal murder, Umesh Pal case, Atiq Ahmad, Atiq Ahmad son, Atiq Ahmad son encounter, Atiq Ahmad update, Atiq Ahmad news, Atiq Ahmad son, Atiq Ahmad news, Atiq ahmad son asad, atique ahmed son encounter, Atiq Ahmad son, Atiq Ahmad news, Atiq ahmad son asad, atique ahmed son encounter

এনকাউন্টার নিয়ে ‘আষাঢ়ে গল্প’ ফাঁদছে যোগী পুলিশ? রাজনৈতিক মহলে চূড়ান্ত শোরগোল

উত্তরপ্রদেশে সম্প্রতি একাধিক এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই ভুয়ো এনকাউন্টার বলে অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বেছে বেছে রাজপুত ও ঠাকুর বাদে অন্যান্য মাফিয়াদের হত্যা করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। উত্তরপ্রদেশে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে ঠাকুর ও রাজপুতদের তীব্র বিরোধ রয়েছে। সেই হিসেব মাথায় রেখে ব্রাহ্মণ মাফিয়াদেরও বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে। যদিও পুলিশের দাবি, এই সব দুষ্কৃতীরা সবাই সংঘর্ষে মারা গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, গোটা ভুয়ো সংঘর্ষের ঘটনায় পিছন থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

Advertisment

আসাদ আহমেদ এবং সহযোগী উভয়েই উমেশ পাল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত। তারা উভয়েই ৫০ দিন ধরে পলাতক ছিলেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৭ সালের মার্চ মাসে যোগী আদিত্যনাথ সরকার প্রথমবার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এটি উত্তর প্রদেশে ১৮৩ তম নম্বর এনকাউন্টার, সেই সঙ্গে চলতি মাসেই এটা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তৃতীয় এনকাউন্টার। আর এই এনকাউন্টার নিয়েই উঠেছে বেশ কিছু প্রশ্ন। 

গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ, উমেশ পাল হত্যা মামলায় মোস্ট ওয়ান্টেড, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাঁসিতে উত্তরপ্রদেশের ১২ সদস্যের এসটিএফ দলের এনকাউন্টারে নিহত হয়েছেন। আসাদের পাশাপাশি এনকাউন্টারে সহ-অভিযুক্ত গোলামও নিহত হয়। তাদের দুজনের মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা।

এফআইআর অনুসারে, আসাদ এবং গুলাম নম্বর প্লেট ছাড়াই একটি লাল এবং কালো ডিসকভার মোটরসাইকেলে চড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় পুলিশ তাদের দেখতে পায় এবং থামতে বলে। আসাদ ও গোলাম নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ দুজনকে গুলি করে হত্যা করে।উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার পুলিশকে তাদের সফল অভিযানের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে পুরো এনকাউন্টারটি নিয়ে।

উত্তরপ্রদেশ এসটিএফ জানিয়েছে, আসাদ এবং গুলাম একটি নম্বর প্লেট বিহীন লাল এবং কালো ডিসকভার মোটরসাইকেলে চেপে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ দেখতে পেয়ে ওয়ান্টেড দুজনকে ধাওয়া করে এবং না থামাতেই তাদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। বাইকটি  উল্টে রাস্তার পাশে একটি বাঁশঝাড়ের কাছে পড়েছিল।

বাইকটি পাথুরে রাস্তায় উল্টে যাওয়ারও পড়েও বাইকে একটিও স্ক্র্যাচ ছিল না। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়নি বাইকের চাবিও। হারিয়ে যাওয়া বাইকের চাবি নিয়ে রহস্য রয়েই গিয়েছে। STF টিম, যে বাইকে আসাদ এবং গুলাম ছিলেন সেটিকে আটক করেছে। বাইকে কোন নম্বর প্লেট বা চেসিস নম্বর ছিল না। ফলে বাইকের মালিককে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে পুলিশের কাছে।এর পাশাপাশি এনকাউন্টার স্পট থেকে কোন হেলমেট উদ্ধার হয়নি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, আসাদ ও গুলাম অনেক দিন ধরে নিখোঁজ ছিল এবং পুলিশের কবল থেকে বাঁচতে ভিন্ন রাজ্যে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এখানেই রয়ে গিয়েছে একটি প্রশ্ন! নিরাপত্তার কথা বাদ দিলেও,  পুলিশের নজর এড়াতে তারা দুজন কেন হেলমেট ব্যবহার করেনি।

পুলিশি নজর এড়াতে তারা হেলমেট পরবে না এটা কিভাবে সম্ভব? আসাদ এবং গোলাম দুজনকেই পুলিশের খাতায় যখন ওয়ান্টেড ছিল। তাদের ওপর ৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। তারপরেও তারা পুলিশের নজর এড়াতে হেলমেট ব্যবহার করবে না এটা কী করে সম্ভব উঠেছে প্রশ্ন। এমনকি তারা হেলমেট না পরে তারা কীভাবে ভিন রাজ্য থেকে ঝাঁসিতে প্রবেশ করল? হাইওয়ের কাছে এবড়োখেবড়ো, রুক্ষ রাস্তায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে যানবাহন চালান প্রায় অসম্ভ। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে এসটিএফ টিম যখন আসাদ ও গোলামকে তাড়া করে তখন এই এবড়োখেবড়ো রাস্তা দিয়ে তারা কীভাবে দ্রুত পালানোর পরিকল্পনা করতে পারে? এই রাস্তায় পুলিশ অনায়াসেই তাড়া করে তাদের দুজনকে ধরতে পারত। 

শেষ পর্যন্ত, এনকাউন্টারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যে এলাকায় এনকাউন্টারটি হয়েছে সেটি জাতীয় সড়ক থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হাইওয়েতে পৌঁছানোর জন্য সেখান থেকেই রয়েছে একটি ছোট রাস্তা।  এই রাস্তার কথা তাদের পক্ষে জানাটাও প্রায় অসম্ভব।  উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, আসাদ ও গুলাম রাজস্থান এবং অন্যান্য জায়গায় লুকিয়ে ছিল এবং পরে ঝাঁসিতে পালিয়ে আসে। এই ছোট এবড়ো-খেবড়ো রাস্তার কথা জানা তাদের পক্ষে কতটা সম্ভব তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এদিকে এই এনকাউন্টারের ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। বিএসপি প্রধান মায়াবতী, এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব এবং এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সহ বিরোধী নেতারা ঝাঁসি এনকাউন্টার নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেছেন, বিজেপিকে মূল বিষয়গুলি থেকে সাধারণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করার জন্যই মিথ্যা এনকাউন্টারের গল্প ফাঁদছে। টুইটারে অখিলেশ যাদব লিখেছেন, "মিথ্যা এনকাউন্টার করে, বিজেপি সরকার আসল বিষয়গুলি থেকে সাধারণের মনোসংযোগ সরানোর চেষ্টা করছে। এই এনকাউন্টার এবং সাম্প্রতিক এনকাউন্টারগুলিরও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত, কোনটা সঠিক বা কোনটা ভুল তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র আদালতের”। মায়াবতী এই এনকাউন্টার প্রসঙ্গে বলেছেন, “আসাদের এনকাউন্টারে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত”

আসাদের এনকাউন্টারকে বিকাশ দুবে ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলেও উল্লেখ করে মায়াবতী বলেন, ঘটনার পিছনের সত্য জানার অধিকার সকলের রয়েছে। তাই এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত প্রয়োজন। এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও আসাদের এনকাউন্টার নিয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন।

uttar pradesh yogi adityanath
Advertisment