গত বছর ঠিক এই সময়েই দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজে করোনা সংক্রমণের দায়ে তবলিঘি জামাত সদস্যদের কাঠগড়ায় তুলেছিল গোটা দেশ। পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন জামাতের প্রধান মৌলানা সাদ। ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল। বছর ঘুরলেও ফের একই চিত্র উত্তরাখণ্ডে। তবে এবার তবলিঘি জামাত নয়, কাঠগড়ায় মহাকুম্ভ মেলা। কোভিড বিধির বালাই নেই, পুণ্যার্থীদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন।
সোমবার হরিদ্বারে মহাকুম্ভের দ্বাদশতম দিন ছিল। গোটা দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল সব রাজ্য, তখনই লাখ লাখ পুণ্যার্থীর জমায়েত হরিদ্বারে। সোমবার সন্ধেয় ২৮ লক্ষ পুণ্যার্থী শাহী স্নানের জন্য উপস্থিত হন হরিদ্বারে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের মতে, রবিবার রাত ১১.৩০ থেকে সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মাত্র ১৮,১৬৯ জনের কোভিড টেস্ট সম্ভব হয়েছে। তার মধ্যে ১০২ জন সংক্রমিত পাওয়া গিয়েছে।
গত ৪৮ ঘণ্টায় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের টিম হরিদ্বার স্টেশন থেকে গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত ১০ কিমি রাস্তায় চষে বেরিয়েছে। হর কি পৌরি ঘাট এবং অন্যান্য ঝায়গায় কোনও রকম থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।। মাস্ক না পরার জন্য কারও বিরুদ্ধে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এমনকী জায়গায় জায়গায় সিসিটিভি থাকলেও। মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের জন্য প্রথমেই কোভিড নেগেটিভ আরটি-পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট দেখানোর নিয়ম। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের টিম অন্তত ৫০ জন পুণ্যার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে, টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন বলেছেন, রিপোর্ট ছাড়াই তাঁরা ঢুকেছেন। এই প্রসঙ্গে মেলার কোভিড-ইন-চার্জ ড. অবিনাশ খান্না জানিয়েছেন, থার্মাল স্ক্রিনিং এবং ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট রাজ্য বর্ডারে, রেল স্টেশনে এবং ঘাট এলাকায় করা হচ্ছে। এদিন সকালে আখড়ার সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। তাই টেস্ট ও স্ক্রিনিং করা হয়নি। আখড়ার সাধু-সন্তদের স্নান শেষ হলেই আবার সেটা চালু হবে।
কুম্ভমেলার আইজি সঞ্জয় গুঞ্জাল জানিয়েছেন, মাস্ক না পরার জন্য চালান এবং থার্মাল স্ক্রিনিং এড়ানোর কারণ হল যাতে বিশেষ বিশেষ জায়গায় ভিড় যাতে না হয়। তাই এদিন ভিড় সামলানোর উপর বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। ঘাটের কাছে স্ক্রিনিং এবং চেকিং বন্ধ ছিল এদিন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত বলেছেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের নির্দেশিত সবরকম কোভিড বিধি পালনে বদ্ধপরিকর। তাঁর দাবি, মহাকুম্ভে কেন্দ্রের কোভিড প্রোটোকল ১০০ শতাংশ মানা হয়েছে।