অমর্ত্য সেনের পর ফের ইতিহাস রচনা বাঙালির। ২০১৯-এর অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এস্থার ডাফলো, মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে অর্থনীতির সর্বোচ্চ সম্মান পাচ্ছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ব জুড়ে দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে পরীক্ষানীরিক্ষামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ নোবেল পেলেন তিন অর্থনীতিবিদ।
নোবেল সম্মান পাওয়ার খবরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায় এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, "এই সম্মান পেয়ে আমি গর্বিত। পৃথিবীর প্রায় ২০টা দেশ ঘুরে আমি গবেষণা করেছি। একাধিকবার আমার কাজের জন্যই অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমাকে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটাই ভেবে নিতে হয়েছে"।
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল পাওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত অধ্যাপকের প্রাক্তন স্ত্রী অরুন্ধতী বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানালেন, "খুব খুশি হয়েছি"।
I always felt proud that my PhD adviser was a Nobel laureate. Now my son has reason to feel the same since he did his PhD with Abhijit Banerjee.
— Kaushik Basu (@kaushikcbasu) October 14, 2019
আরও পড়ুন, ‘কেমন আছ, কী খেলে’ এসব নয়, আমাদের মধ্যে শুধুই অর্থনীতি-র কথা হতো’
ঘটনাচক্রে ২০১৯-এর আরেক নোবেলজয়ী এস্থার ডাফলো এবং অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বামী-স্ত্রী। এই মুহূর্তে দুজনেই ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করছেন। আরেক নোবেলজয়ী ক্রেমার যুক্ত রয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: কেন অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন অভিজিৎ বিনায়করা?
৫৮ বছরের অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্কুল জীবন কেটেছে কলকাতাতেই। সাউথ পয়েন্ট স্কুল থেকে পাশ করে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা শুরু। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৮৩ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই মার্কিন নাগরিক।
অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতির কিংবদন্তি অধ্যাপক।
আরও পড়ুন, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার কারণ কী?
" width="640" height="360" allowfullscreen="allowfullscreen" data-mce-fragment="1">
2019 Economic Sciences Laureates Abhijit Banerjee and Esther Duflo, often with Michael Kremer, soon performed similar studies of other issues and in other countries, including India. Their experimental research methods now entirely dominate development economics.#NobelPrize
— The Nobel Prize (@NobelPrize) October 14, 2019
উল্লেখ্য, অর্থনীতির সর্বোচ্চ সম্মানকে নোবেল পুরস্কার বলা যায় না। এর পোশাকি নাম- সভেরিজেস রিক্সব্যাঙ্ক সম্মান। নোবেল কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটেই এর উল্লেখও রয়েছে। কারণ, আলফ্রেড নোবেল ১৯০১ সালে যখন নোবেল সম্মান দেওয়া শুরু করেন, সে সময় চিকিৎসা বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য এবং শান্তিতেই কেবল এই সম্মান প্রদানের রেওয়াজ ছিল। ১৯৬৮ সালে প্রথম অর্থনীতিতে পুরষ্কার দেওয়া শুরু করে নোবেল কর্তৃপক্ষ।
The 2019 Economic Sciences Laureates’ research findings have dramatically improved our ability to fight poverty in practice. As a result of one of their studies, more than 5 million Indian children have benefitted from programmes of remedial tutoring in schools.#NobelPrize
— The Nobel Prize (@NobelPrize) October 14, 2019
২০১৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন দুই মার্কিন অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ডি নর্ডহাউস এবং পল এম রোমার। বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থিতিশীল উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করায় এই সম্মান পেয়েছিলেন দুই অর্থনীতিবিদ।
এর আগে ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন ভারতীয় সমাজকর্মী কৈলাশ সত্যার্থী।