হিন্দিকে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্যতামূলক ভাবে গোটা দেশে পড়ানোর ব্যাপারে এগোতেই প্রতিবাদ উঠতে শুরু করেছে। তামিলনাড়ু আগেই প্রতিবাদ করেছে। এবার সরব হল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্য। সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটি চলতি সপ্তাহের গোড়ায় বৈঠক করেছিল। কমিটির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বিজেপির ভাবনা অনুযায়ী, দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ভাবে হিন্দি পড়ানোর পক্ষে। আর, এখানেই আপত্তি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর বিভিন্ন সংগঠন। এমনকী, অসমের শীর্ষ সাহিত্য তত্ত্বাবধায়ক সংগঠন অসম সাহিত্য সভাও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে পুনর্বিবেচনা করুক। এই আর্জি জানিয়েছে ওই সংগঠন।
সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭তম বৈঠকে শাহ জানান, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২,২০০ হিন্দি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। সঙ্গে জানান, হিন্দি ভারতের ভাষা। একইসঙ্গে শাহ জানান, ইংরেজির বদলে হিন্দি পড়ানো হবে। সঙ্গে, স্থানীয় ভাষা যেভাবে পড়ানো হয়, সেভাবেই পড়ানো চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশকে অবশ্য এই তালিকা থেকে বাদ রেখেছেন শাহ। কারণ, অরুণাচলে ইংরেজি না। আন্তর্জাতিক মিশ্রিত ভাষা লিঙ্গুয়া ফ্র্যাংকা দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো হয়।
শাহর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনগুলোও। এই ছাত্র সংগঠনগুলোর ভালো প্রভাব রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজনৈতিক জীবনে। তারা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার যা বলছে, সেটা জোর করে চাপানো ছাড়া কিছু না। কংগ্রেসও শাহর ঘোষণার নিন্দা করেছে। অসমের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সইকিয়া শিক্ষায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। কারণ, শিক্ষা রাজ্যের অধিকার পড়ে। দেবব্রতর অভিযোগ, হিন্দিতে জোর দিলে ইংরেজি শেখায় ঘাটতি পড়বে। তাতে ছেলেমেয়েরা ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হবে।
মেঘালয়ের সাসপেন্ডেড কংগ্রেস বিধায়ক আমপারিন লিংডোও কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, 'আমি জানি না, ঠিক কোন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার ষষ্ঠ তফসিল আইন অনুযায়ী মেঘালয়ের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দিতে পারে না। এই নির্দেশ এখানে লাগু করা যাবে না।
Read story in English