সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণে ইন্দো-চিন সেনা ও কূটনতিকস্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে, মে মাসে সীমান্তজুড়ে উভয় দেশই তাদের বাহিনীর অবস্থান এগিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনা সূত্রে জানানো হয়, সেনার স্বাভাববিক অবস্থানের থেকে তিন সেক্টরেই গত মাসে দুই দেশের সেনা বেশ কিছুটা করে এগিয়ে এসেছিল। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে যে, পশ্চিমাঞ্চলের অন্তর্গত পূর্ব লাদাখে দুই দেশের সেনা মুখোমুখি অবস্থান করলেও ভারত ও চিনার সেনার সংখ্যা মধ্য ও পূর্বাঞ্চলেও বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পূর্ব লাদাখে চিনা সেনা যতটা এগিয়েছিল, সেই তুলনায় মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে সেনা মোতায়েন কম হয়েছিল।
গত মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এলএসি-র ওপারে চিনের সমরাস্ত্র ও সেনা মজুত বৃদ্ধির পাল্টা ভারতও বাহিনী সংখ্যা বাড়াতে থাকে। ফলে উত্তেজনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে তা প্রশমণের উদ্যোগ নেয় দু'দেশ। শুরু হয় সেনা ও কূটনীতিক পর্যায়ে আলোচনা। গত ৬ জুন উভয় দেশের সেনা কমান্ডার পর্যায়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকের পরই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। জানা যায়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে অংশে সেনা ও সমরাস্ত্র মজুত করেছিল ভারত ও চিন, তা ক্রমেই প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গালওয়ান ও লাদাখের হট স্প্রিং অঞ্চলের একাধিক এলাকা থেকেই বাহিনী প্রত্যাহার করেছে দুই দেশ।
লাদাখে প্রায় ১০ হাজার বাহিনী মোতায়েন করেছিল ভারতীয় সেনা। 'বাড়তি বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন হলে তা করতে হবে। প্রয়োজন না লাগলে বাহিনীকে ফেরৎ আনতে হবে। এটা চাহিদার নিরিখে নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। পুরো বিষয়টাই নির্ভর করে প্রতিপক্ষের পদক্ষেপের উপর।' প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়তি সেনা মোতায়ের প্রসঙ্গে সূত্রে মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে দুই দেশই সেনা সরাচ্ছে: চিন
সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাসে ৬ই জুনের পর গত বুধবার ফের উভয় দেশেপর সেনা পর্যায়ে বৈঠক হয়। সূত্র জানাচ্ছে 'আলোচনা ধীর গতিতে এগোচ্ছে ও সময়সাপেক্ষ'। সেনাস্তরে পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্যাংগং টিএসও-র উত্তরে চার নম্বর ফিঙ্গারে ভারতীয় সেনার নজরদারি বন্ধ করেছিল চিনারা। নয়া দিল্লির দাবি এই অঞ্চল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে অবস্থিত। এই ইস্যুতেই আলোচনাকে আগ্রাধিকার দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।
চিনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িঙ্গ বুধবার জানিয়েছিলেন, পূর্ব-লাদাখের এলএসিতে উত্তেজনা প্রশমনে দু’দেশের সেনা ও কূটনৈতিকদের মধ্যে আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।' প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা প্রসঙ্গে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বৃহস্পতিবার জানান, 'গত ৬ জুন দু’দেশের সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে এলএসিতে শাস্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরানোর লক্ষ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা জারি রয়েছে। দু'দেশের নেতৃত্বের নেওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে আলোচনার ভিত্তিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য এই আলোচনা খুবই গুরুত্ববাহী।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন