Advertisment

Bilkis case: ভয়াবহ স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায়, দুঃস্বপ্নের অবসান চান বিলকিস মামলার সর্বকনিষ্ঠ সাক্ষী!

সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেয়েছেন বিলকিস বানো। ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই এমনটাই নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। সেই সঙ্গে মুখ পুড়েছে গুজরাট সরকারের। আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার আইনি এক্তিয়ার নেই গুজরাট সরকারের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bilkis Bano case, Supreme Court, Gujarat government, polic

সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেয়েছেন বিলকিস বানো। ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই এমনটাই নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। সেই সঙ্গে মুখ পুড়েছে গুজরাট সরকারের। আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার আইনি এক্তিয়ার নেই গুজরাট সরকারের।

সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেয়েছেন বিলকিস বানো। ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই এমনটাই নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। সেই সঙ্গে মুখ পুড়েছে গুজরাট সরকারের। আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার আইনি এক্তিয়ার নেই গুজরাট সরকারের। তাই দুসপ্তাহের মধ্যেই আত্মসমর্পণ করতে হবে মুক্তি পাওয়া ধর্ষকদের।

Advertisment

সোমবার, সুপ্রিম নির্দেশ সামনে আসার পর এই মামলার সর্বকনিষ্ঠ সাক্ষী জানিয়েছেন, “দেড় বছরেরও বেশি সময় পরে আমি প্রথমবারের মতো হাসলাম…! আমার বুক থেকে যেন একটা পাথর নামল, আমি আবার ভালভাবে শ্বাস নিতে পারব "। বিলকিস বানো মামলার কনিষ্ঠতম সাক্ষী, বিলকিসেরই খুড়তুতো ভাই। যিনি তার মা এবং বড় বোনকে উন্মত্ত জনতার হাতে নিহত হতে দেখেছিলেন।

রায় শোনার পর কাঁপা গলায় তার তিনি ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “তারা কোনভাবেই নির্দোষ নয়। তারা খুনি। তারা মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য… আমি যা হারিয়েছি তা আর কোনভাবেই ফিরে আসবে না"। ২০০২ সালে তার বয়স ছিল সাত, এখন ২৮। বিলকিস বানো মামলার ৭৩ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনিও একজন। তিনি বলেন, “সেদিন আমি তাদের মুখ দেখেছি। ওরা আমার 'আম্মিকে' মেরে ফেলে… প্রতি রাতে, সেই ছবিগুলো আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে"।

বিলকিসকে গণধর্ষণকারীদের হাতে নিহত ১৪ জনের মধ্যে ছিলেন তার মা এবং বোন ছিলেন। ১৫, আগাস্ট ২০২২- এ বিলকিস বানো মামলায় আসামিদের মুক্তির পর থেকেই তিনি এই মামলার বিষয়ে আপডেট রেখে চলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “আসলে আমার কোনো আশা ছিল না যে তারা আবার জেলে ফিরবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাদের আবার জেলে ফিরতে হবে। এই আদেশ আমার ব্যথা পুরোপুরি না কমলেও তাতে কিছুটা প্রলেপ লাগাবে…"।

২০০৫ সালের জুন মাসে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে যখন তিনি প্রথম সাক্ষ্য দেন তখন তার বয়স ছিল ১২। ১১ জনকে দোষী ঘোষণা করে সিবিআই আদালতের রায় বহাল রাখার ২০১৭ সালের রায়ে, বোম্বে হাইকোর্ট বলেছিল যে সাক্ষীর সাক্ষ্য এই মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জেরা করা হয়েছিল কারণ বিলকিস সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী হিসাবে অভিযুক্তদের প্রমাণ করার ক্ষেত্রে তিনিই একমাত্র সাক্ষী ছিলেন।"

ট্রায়াল কোর্টের বিচারপতি ইউ ডি সালভি সেদিনের সেই শিশুর সাহসের প্রশংসা করেছিলেন। ঘটনার পর, ছেলেটিকে দাহোদ থেকে গোধরার একটি ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে কয়েক মাসের জন্য কচ্ছের একটি হোস্টেলে স্থানান্তরিত করা হয় যতক্ষণ না সিবিআই তদন্তের দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়।

অসহায় সেই ছেলেটির পেশে সেদিন দাঁড়ান এক সহৃদয় ব্যক্তি। যাকে ছেলেটি 'চাচা' বলে ডাকত। তিনি বলেন, “যখন সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল, তারা তাকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল। আমাকে তাকে হোস্টেল থেকে ফিরিয়ে আনতে হয়েছিল। অপরাধের বর্ণনা করতে গিয়ে সে ট্রমায় চলে যায়। সিবিআই অফিসাররা আমাকে তাকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। ডাক্তার তখন পরামর্শ দেন যে ছেলেটি ট্রমায় ভুগছেন এবং তার একটি পরিবারের প্রয়োজন। তাই, আমি তাকে আহমেদাবাদে আমার মায়ের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম এবং তাকে মানুষ করার দায়িত্ব নিই"।

এখন সেদিনের সেই সেই ছেলেটি ২৮ বছরের এক তরতাজা যুবক। আজও তাকে আতঙ্ক তাড়া করে বেড়ায়। তিনি বলেন,
আমি নিজেকে কাজের মধ্যে রাখার চেষ্টা করি। বন্ধু, আত্মীয় বা এমনকি আমার ছেলের সঙ্গে যখন সময় কাটাই তখন আমি স্বাভাবিক থাকতে পারি। কিন্তু আমি যখন একা থাকি তখনই আমার মায়ের মুখ, তার কণ্ঠ, সেই ছবিগুলো… আমাকে যেন তাড়া করে বেড়ায়'।

তার স্ত্রী, তার শৈশবের বন্ধু, বলেছেন যে তাকে তার ট্রমা থেকে বের করে আনতে "বেশ কয়েক বছর" লেগেছে। “অভিযুক্তদের মুক্তি মঞ্জুর হওয়ার পর থেকে সে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সুপ্রিম রায়ের পর এখনও সে বিশ্বাস করে না যে অভিযুক্তরা বেশিদিন কারাগারে আড়ালে থাকবে"।

Bilkis Bano
Advertisment