এনআরসি প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে অনুযোগ জানিয়ে এলেন কবি মন্দাক্রান্তা সেন, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ পাঁচজনের প্রতিনিধি দল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে বৈঠক করে রাজভবন থেকে বেরিয়ে এসে মন্দাক্রান্তা বলেন, "এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক, বিভ্রান্তির কথা আমরা রাজ্যপালকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।" কবি মন্দাক্রান্তার দাবি, এনআরসি নিয়ে রাজ্যপালও তাঁদের সঙ্গে আছেন।
মঙ্গলবার কবি মন্দাক্রান্তা সেন, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, চলচ্চিত্র নির্মাতা কৌশিক চৌধুরী, সমাজকর্মী পীযুষ ধর, আইনজীবী সব্য়সাচী চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যের মানুষ এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত বলে তাঁরা জগদীপ ধানকড়কে জানান। একইসঙ্গে তাঁরা বাংলায় এনআরসি লাগু না করার জন্য়ও রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানান।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রের জমি উদ্বাস্তুদের দেবে মমতা, রাজ্যের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন রাহুল সিনহার
আইনজীবী সব্য়সাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এনআরসি নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন। বহু মানুষ চিন্তায় আছেন, তাঁরা কোথায় যাবেন, কী করবেন?" তাঁর বক্তব্য, "রাজ্যপালকে বলেছি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে সারা দেশে এনআরসি তৈরি হবে। তাতে বাংলার মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ। শাসকদলও সুরাহা না করে অযথা আতঙ্ক তৈরি করছে, তাতেও মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব নিয়েই রাজ্যপালকে আনুরোধ করেছি। তাঁর সাংবিধানিক অবস্থান থেকে তিনি যাতে মানুষকে আশ্বস্ত করতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিষয়টি পৌঁছান, এটাই অনুরোধ।" এই প্রতিনিধি দলের দাবি, বাংলায় যেন এনআরসি লাগু না হয় এবং মানুষের শান্তি বিঘ্নিত না হয়।
আরও পড়ুন- মুকুলের হাতেই তৃণমূলের তহবিল ছিল, বিস্ফোরক পার্থ চট্টোপাধ্যায়
আসামে এনআরসি তালিকায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। এনআরসি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সারা দেশ। উত্তাল হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দল। তবু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এনআরসি লাগু করার পক্ষে সোচ্চার হয়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতারা। স্বাভাবিকভাবে এ রাজ্যেও এনআরসি নিয়ে জল্পনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসির বিরোধিতা করে আসছেন প্রথম থেকেই। এবার খোদ রাজ্যপালের দ্বারস্থ হলেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ।
আরও পড়ুন- তিন কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে জিতবে বিজেপি, ‘দায়িত্ব সহকারে’ দাবি মুকুলের
এদিন মন্দাক্রান্তা বলেন, "রাজ্যপালকে জাানলাম প্রান্তিক, দরিদ্র মানুষ এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন। নাগরিকদের ভোটে সরকার ক্ষমতায় আসছে। আর তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন! মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হন, আতঙ্কিত না হন, তা দেখতে হবে। রাজ্যপাল আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেবেন। উনিও আমাদের সঙ্গে আছেন।"