বাংলায় এনআরসি আতঙ্ক। তার জেরেই গত দু'দিনে রাজ্যে তিন জনের প্রাণ গিয়েছে বলে আশঙ্কা। এদের মধ্যে দু'জন আত্মঘাতী হয়েছেন। অতিরিক্ত চাপের কারণে অন্যজন হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, এনআরসির জন্য প্রয়োজনীয় নথি খুঁজে না পাওয়ার চিন্তা থেকেই এই পরিণতি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থানার বাসিন্দা বছর ৪২-এর কালাচাঁদ মিদ্দা শনিবার সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। রবিবার বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কিছুটা দূরে বাঁশবাগানে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ফলতা থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মৃত কালাচাঁদের স্ত্রী সলমা বিবির দাবি, 'এরাজ্যে এনআরসির জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা করতে হবে। সেই নথিই কুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। সেই থেকেই আতঙ্ক তাঁকে গ্রাস করেছিল। তালিকা থেকে নাম বাদ পড়লে কোথায় যাবেন সেই ভাবনা থেকেই কালাচাঁদ আত্মহত্যা করেছে।'
আরও পড়ুন: মোদীর মুখে ভারতের ভাষা বৈচিত্রের কথা, আট ভাষায় বললেন ‘সব ভাল আছে’
রবিবার, উত্তর ২৪ পরগনার বসিররহাট নিজের বাড়ির কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কামাল হোসেন মণ্ডলের দেহ। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কামালের সরকারি পরিচয় পত্রে নামের বানান ভুল ছিল। যা বদল করতে তাঁর কালঘাম ছুটে যায়। তবে, কাজের কাজ হয়নি। এরআরসির কাজ শুরু হলে এদেশে আর ঠাঁই হবে না বলে মনে করত সে। ওই আতঙ্ক থেকেই এই পরিণতি বলে মনে করছেন মৃতের ভাই জামাল।
আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা বিলোপে সন্ত্রাসীদের সমর্থনকারীরা সমস্যার সম্মুখীন, হাওডি-তে বললেন মোদী
এছাডা়, ওই জেলারই শাসনে আয়েপ আলি নামে ৫৫ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যর খবর পাওয়া গিয়েছে। দীর্ঘ দিন পঞ্চায়েত, বিডিও দফতরে ঘুরে সে সম্পত্তির দলির আদায় করতে পারেননি। শনিবার, অসুস্থ বোধ করার তাঁকতে ভর্তি করা হয় বারাসত হাসপাতালে। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। এনআরসি হলে কী হবে? গত এক সপ্তাহ ধরে অতিরিক্ত মানসিক এই টানাপোড়েনের কারণেই এই পরিণতি বলে দাবি পরিবারের।
গত শুক্রবারই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দাঁড়িয়ে এনআরসি আতঙ্কে জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুরের দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানান। আশ্বাস দেন, বাংলায় এনআরসি লাগু করতে দেওয়া হবে না। রাজ্যবাসীর কাছে সরকারি যেকোনও পরিচয়পত্র থাকলেই কাজ চলবে। অযথা এনিয়ে আতহ্কের কোনও কারণ নেই।
Read the full story in English