বুলন্দশহরকাণ্ডে নয়া মোড়। "কোনও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেনি, এটা দুর্ঘটনা মাত্র," এমন চাঞ্চল্যকর দাবিই করলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আদিত্যনাথের কথায়, পুলিশ আধিকারিক সুবোধ কুমার সিংয়ের মৃত্যুর ঘটনা দুর্ঘটনা মাত্র, এটা গণপিটুনি নয়। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে বুলন্দশহরের ঘটনা যে নয়া মোড় নিল, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
শুক্রবার এ ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "উত্তর প্রদেশে কোনও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেনি। বুলন্দশহরের ঘটনাটা দুর্ঘটনা মাত্র। আইন তার পথেই এগোচ্ছে। কোনও অপরাধীকে রেয়াত করা হবে না। গো-হত্যাই শুধু নয়, কোনওরকম বেআইনি পশু হত্যাও নিষিদ্ধ গোটা রাজ্যে। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে জবাব দিতে হবে এজন্য।"
অন্যদিকে, পুলিশ আধিকারিকসহ দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয়। এক সাংবাদিক বৈঠকে অতিরিক্ত ডিজিপি (আইনশৃঙ্খলা) আনন্দ কুমার জানিয়েছেন যে, পাঁচ সন্দেহভাজন চন্দ্র, রোহিত, সোনু, জিতেন্দ্র ও নিতিন সিয়ানার বাসিন্দা। তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বুলন্দশহরকাণ্ডে গোহত্যার ঘটনাই এখন মাথাব্যথা পুলিশের
এদিকে, বুলন্দশহরে হিংসার ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ভারতীয় সেনার। ইন্সপেক্টর খুনে এফআইআরে নাম রয়েছে এক সেনা জওয়ানের। জিতেন্দ্র মালিক নামে ওই জওয়ান বুলন্দশহরে হিংসার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। পরে জিতেন্দ্র পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ইন্সপেক্টর খুনে জিতেন্দ্র মালিক ওরফে জিতু ফৌজিকে হিংসার ঘটনার ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, যে ভিডিওটি ঘুরছে সোশাল দুনিয়ায়। ওই ভিডিওতে জিতুকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে। যদিও জিতুর মা রতন কউর পুলিশের কাছে দাবি করেছেন যে, তাঁর ছেলে এ ঘটনায় জড়িত নন।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত ডিজিপি বলেছেন, "ভিডিওতে জিতু নামের যে ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে তিনি ভারতীয় সেনায় কর্মরত, বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে রয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পারি। এ ঘটনায় ওর ভূমিকা খতিয়ে দেখছে সিট (স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা বিশেষ তদন্তকারী দল)। এ ঘটনায় তদন্তের জন্য আমাদের একটা দল জম্মু-কাশ্মীর রওনা দিয়েছে।’’
মঙ্গলবার জিতুর মা রতন কউর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান যে, তাঁর ছেলে জম্মু-কাশ্মীরে কর্মরত। তিনি এও জানিয়েছেন যে, সোমবার সিয়ানায় জমায়েত দেখে সেখানে গিয়েছিলেন জিতু।
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নর্দার্ন কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। সঠিক সময়ে পুলিশ সবটা জানাবে। যেহেতু এ ঘটনার তদন্ত চলছে এখন, তাই এ নিয়ে আর কিছু বিশদে বলা যাবে না।" এদিকে, এডিজি এস বি শিরোদকর শুক্রবার এ ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছেন।
Read the full story in English