আপাতদৃষ্টিতে মধুরেণ সমাপয়েৎ মনে হলেও দৃশ্যের যবনিকা পতন হয়নি এখনও। শুক্রবার কলকাতা পুলিশের ডিসি সাউথ মিরাজ খালিদের অফিসে CMRI-এর তথাকথিত নিগৃহীত চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদাম এবং অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক, যাদবপুর থানার ওসি পুলক দত্তের 'বন্ধুত্বপূর্ণ মিটমাট' করানো হলেও, তা মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না বেশ কিছু চিকিৎসক সংগঠন। এবং ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা।
এমন 'বন্ধুত্বপূর্ণ মিটমাটের' কোনও অর্থই হয় না বলে সাফ জানিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম। ইতিমধ্যেই ঘটনার বিরোধীতায় একাধিক কর্মসূচিও ঘোষণা করছে এই সংগঠন। শনিবার একটি বৈঠকের পর আগামীকাল, অর্থাৎ সোমবার, একটি মিছিলের আয়োজন করছেন পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরামের চিকিৎসকরা। পাশাপাশি চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কালকের মধ্যে অভিযুক্ত ওসি গ্রেফতার না হলে কর্মবিরতির ঘোষণা করবেন চিকিৎসকরা। ডাঃ পূর্ণব্রত গুণের কথায়, ''আইন সকলের জন্যই এক, পুলিশ বলে ছাড় পেতে পারেন না। অন্যান্যদের মতো একই ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাদবপুর থানার ওসির বিরুদ্ধেও।''
আরও পড়ুন: জুনিয়র চিকিৎসক নিগ্রহকাণ্ডে মধুরেণ সমাপয়েৎ!
CMRI কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর কেন কোনও এফআইআর দায়ের করেন নি, এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে ডাঃ রেজাউল করিম বলেন, "শুধু পুলিশই নয়, অভিযোগ দায়ের না করে অমার্জনীয় অপরাধ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। আমরা তাঁদেরকেও চিঠি দিয়েছি, তবে কোনও উত্তর আসেনি হাসপাতালের তরফ থেকে।" কার্যত খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখার দাবি জানিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন। এ প্রসঙ্গে CMRI-এর সাফাই, সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক মতো কাজ করছিল না।
ঘটনা প্রসঙ্গে ডাঃ কৌশিক চাকি জানান, CMRI এবং ওই জুনিয়র চিকিৎসকের তরফে ঘটনার যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, শ্রীনিবাস গেদাম PGT (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি) হওয়ার কারণে পুরোপুরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভরশীল, এমতাবস্থায় কার্যত তাঁকে ভয় দেখিয়ে চাপ দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ। এ তো গেল এক তরফের অভিযোগ, অন্যদিকে অনেকেই মনে করছেন, ওই চিকিৎসককে যদি সত্যি চাপ দিয়েই মিটমাট করানো হয়ে থাকে, সে সময় কোথায় ছিলেন এই প্রতিবাদী চিকিৎসকরা, কেন তাঁরা এই জুনিয়র চিকিৎসকের পাশে এসে দাঁড়ালেন না?
সব মিলিয়ে পরিস্থিতির জট কাটেনি এখনও। অপেক্ষা সোমবারের মিছিলের।