ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা্র জের। দেশ জুড়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছে রেলমন্ত্রক। মাত্র ২৪ ঘন্টা আগে ওড়িশা ট্রেনদুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে রেল। এরপরই রেলের তরফে বিরাট ঘোষণা। সারা দেশের প্রতিটি বিভাগে সিগন্যালিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর এবং সেই সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের ওপর বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেলের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম বদলানোর ফলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব গতকাল জানিয়েছেন এই ঘটনায় যাদের গাফিলতি রয়েছে তাদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। স্টেশনের সমস্ত রিলে রুম চেক করার পাশাপাশি ডাবল লকিং ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশে।
শুক্রবারের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে আহত হয়েছে হাজারের বেশি যাত্রী। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে রেল আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সিগন্যালিং ব্যবস্থার ত্রুটির কারণেই ঘটে গিয়েছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে অনেক বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে রেলে নিরাপত্তার অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু আরও অনেক কিছু করতে হবে। ওড়িশা দুর্ঘটনা রেলের আধুনিকীকরণের পথে সরকারের পরিকল্পনার জন্য একটি বড় ধাক্কা।
যে রুটে এই ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি দেশের প্রাচীনতম এবং ব্যস্ততম রুট। কয়লা ও তেল পরিবহনের জন্য এই রুটে পণ্যবাহী ট্রেনও চলাচল করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্র্যাকগুলো অনেক পুরনো এবং সেগুলোর ওপর অনেক বেশি চাপ পড়েছে, মেরামতের কাজ ঠিকমতো না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভারতীয় রেলওয়েতে রেল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিন্তু তাদের বাস্তবায়নের গতি খুবই ধীর। ওড়িশা দুর্ঘটনার পর এই কাজে গতি আসবে বলে আশা।
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে করোমন্ডেল এক্সপ্রেস সিগন্যাল ব্যবস্থার ত্রুটির কারনে ট্রেনটি লুপ লাইনে ঢুকে পণ্যবাহী ট্রেনে ধাক্কা মারে। এর জেরে করোমন্ডেল এক্সপ্রেসের বগিগুলি মেন লাইনের ট্র্যাকের উপর পড়ে যায় এবং অপর দিক থেকে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসটি ট্র্যাকের উপর পড়ে থাকা বগিগুলির সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ থেকে স্পষ্ট যে এই দুর্ঘটনা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিরাট ত্রুটি রয়ে গিয়েছে।