ফের নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের হাতছানি! এবছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’। বঙ্গোপসাগরে আগামী ১০ মে’র মধ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঘূর্ণি ঝড়, জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এবছরের প্রথম এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা।
আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। ৬ মে-র মধ্যে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে সেই ঘূর্ণিঝড়টি ১০-মে’র মধ্যে।
তবে স্থলভাগে আছড়ে পড়লে ঘূর্ণিঝড়টি কোন রাস্তা দিয়ে যাবে এবং কেমন ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, সে বিষয়ে আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে কিছু জানায়নি। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়লে সেটি ওড়িশার কেন্দাপাড়া, ভদ্রক, জাজপুর, বালাসোর, মযূরভঞ্জ এবং কেওনঝড়ে আঘাত করতে পারে বলে আশঙ্কা।
ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়লে বিহার, ঝাড়খণ্ডে তুমুল বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা। ৩-৪ দিন ধরে ওই রাজ্যগুলিতে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। কেরল তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং পুদুচেরিতে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিন্মচাপের সৃষ্টি হয়েছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পরিণত হতে পারে গভীর নিন্মচাপে। এই নিন্মচাপটি ক্রমশ উত্তর পশ্চিমে সরে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া দফতর। তবে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কিনা, কিংবা তা কোথায় আঘাত করতে পারে, তা নিয়ে এখনও কিছুই বলতে পারছে না আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। তাঁরা পরিস্থিতির ওপরে নজর রেখে চলেছেন। নিন্মচাপটি গতি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলা আবহাওয়া দফতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, "আজ পর্যন্ত, আমরা ল্যান্ডফল এবং প্রভাবিত এলাকা সম্পর্কে কোনও পূর্বাভাস জারি করিনি"। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রেখে চলেছে আবহাওয়া দফতর”। দক্ষিণ আন্দামান সাগরে নিন্মচাপ তৈরি হওয়ার পরেই ঝড়ের ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
ওড়িশা সরকার জেলা প্রশাসনকে আগামী চারদিন সতর্ক থাকতে বলেছে। ওড়িশার মুখ্য সচিব সুরেশ চন্দ্র মহাপাত্র বুধবার রাজ্যের সকল জেলাশাসকদের একটি বৈঠক করেন। তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। সংশ্লিষ্ট সব জেলার আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি কোন দিকে মোড় নেবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর পথ আগামী তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে"। দক্ষিণ আন্দামান সাগর, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া্র কারণে মৎস্যজীবীদের আগামী কয়েক দিন বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।