কংগ্রেসের মতিলাল নেহেরু এবং দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অভিনেত্রী পায়েল রোহতগিকে আটদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল রাজস্থানের বুন্দি জেলা আদালত। রবিবার পায়েলের আহমেদাবাদের বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে রাজস্থান পুলিশ। বুন্দির পুলিশ সুপার মমতা গুপ্ত বলেন, "মতিলাল নেহেরু এবং জওহরলাল নেহেরুকে নিয়ে রোহতগি একটি ভিডিও করেছেন। যেখানে তিনি বেশ কিছু অবমাননাকর মন্তব্য করেন। আইটি অ্যাক্টের অধীনে ১০ অক্টোবর মামলা করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে।"
রাজস্থানের বুন্দির পুলিশ সুপার বলেন, "আমাদের কাছে ওঁর বাড়ির কোনও ঠিকানা ছিল না। তাই প্রথমে মুম্বইতে আমাদের টিম পাঠাই। মুম্বইয়ের ও আহমেদাবাদের বাড়িতে থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য বহুবার নোটিস পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সে দেখা করতে আসেনি। তাই আমরা আহমেদাবাদে তাঁর বাড়িতে টিম পাঠাই।" আহমেদাবাদের স্যাটেলাইট পুলিশ স্টেশনের অফিসার-ইন-চার্জ পি ডি দর্জি বলেন, "বুন্দি পুলিশের একটি টিম পৌঁছয় আমাদের পুলিশ স্টেশনে এবং পায়েল রোহতগির মামলায় সাহায্য করতে বলেন। সকাল ১০.৩০ নাগাদ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।"
প্রসঙ্গত, ৬ এবং ২১ সেপ্টেম্বর সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি ভিডিওতে নেহেরু এবং গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায় পায়েল রোহতগিকে। মতিলাল নেহেরু, জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীকে নিয়েও আপত্তিজনক মন্তব্য করেন এই অভিনেত্রী। রাজস্থানের যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক চর্মেশ শর্মা ১০ অক্টোবর পায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। চর্মেশ শর্মা বলেন, "আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানটাই সর্বোপরি। তাঁদের সম্মানের সাথে কোনও আপস হতে পারে না। কোনও ভারতীয় নাগরিক তাঁদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক, অশ্লীল মন্তব্য করতে পারে না।"
পায়েলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ ধারা (শান্তি লঙ্ঘন করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত অপমান), ৬৭ ধারা (সোশাল মিডিয়ায় অশ্লীল কার্যকলাপ)-য় মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও পায়েল টুইট করে বলেন, "আমি গুগল থেকে তথ্য নিয়েই মতিলাল নেহেরুকে নিয়ে একটি ভিডিও করেছি। বাকস্বাধীনতা এখন একটি হাস্যকর জায়গায় পৌঁছেছে।" টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও ট্যাগ করেন। এদিকে, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর টুইট করে বলেন, "পায়েল রোহতগির মন্তব্য অপ্রীতিকর এবং ভুয়ো। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করা বোকামো হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বজায় রাখার অর্থ পুলিশকে না জড়িয়ে তাঁকে এসব মূর্খের কথা বলতে দেওয়া। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া উচিত।"
Read the full story in English