এই প্রথম ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গবাদিপশু পাচার নিয়ে সরকারি বক্তব্য দেওয়া হল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর তরফে। এই পশুপাচারকে 'অমানবিক, নির্দয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহী' কার্যকলাপ বলেও উল্লেখ করেছে বিএসএফ। তবে বিএসএফের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দাবি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এই পাচারকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানায়।
প্রসঙ্গত চলতি জুলাইয়ের শেষেই কোরবানি ঈদ। এর আগেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাড়তে থাকে গরুপাচার। সেই প্রেক্ষিতে ৬ জুলাই সংবাদমাধ্যমের জন্য বিবৃতিতে এই পাচারের পিছনে ধর্মীয় কারণের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়। আরও বলা হয় এই গবাদিপশুর মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিএসএফ-এর এই বিবৃতিটি গোটাটাই লেখা হয়েছে হিন্দি ভাষায়। কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে প্রাণীপাচার চলছে তার বিবরণও দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, "গবাদি পশু পাচারকারীরা অমানবিক, নির্দয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহী। এই কাজ অত্যন্ত ঘৃণ্য।"
আরও পড়ুন, বাংলাদেশী গরু পাচারকারীকে করিমগঞ্জে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগ
কীভাবে জলপথে গরুপাচার চক্র চলে সে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, "পাচার হওয়া প্রাণীদের চোখ বেঁধে দেওয়া হয় প্রথমে। এরপর তাদের কলাগাছের গুড়ির সঙ্গে বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ভাসতে ভাসতে তারা বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছলে সেখানে কয়েকশো গবাদিপশু পাচারকারীরা দাঁড়িয়ে থাকে। জল থেকে প্রাণীদের উঠিয়ে নিয়ে স্পিডবোটে করে নিয়ে চলে যায়। এই কাজটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সেনাদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতেই করা হয়।" বিএসএফ-এর এই বিবৃতিte সই করেছেন সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টেয়িয়ার-এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া।
সেখানে এও বলা হয়েছে প্রাণীগুলিকে পরম যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করা হয়। কিন্তু কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হল নির্যাতন করা। পাশাপাশি, বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "শারীরিক এবং মানসিকভাবে গবাদি পশুদের যেভাবে নির্যাতন করা, তাতে সেই মাংস খাওয়া উচিত নয় কখনই। কারণ ততক্ষণে প্রাণীটির দেহে ল্যাকটিক অ্যাসিডের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে এদের মাংসে অনেক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াও জন্মায়। এজন্য যাঁরা এই মাংস খান তাঁদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।"
আরও পড়ুন, তিন মাসের মধ্যে জলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য চলাচল শুরু
স্থলপথে পাচারের সময়ও পশুগুলিকে অত্যাচার করা হয় বলেই জানান হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়, সীমান্তের কাছে এসে গবাদিপ্রাণীগুলিকে এমন ভাবে ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে তাদের ধরা না যায়। এর জন্য প্রাণীদের দেহে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পাশাপাশি লেজও কেটে দেওয়া হয়। বিএসএফ-এর তরফে বলা হয়েছে ভারতে যে গরুর দাম ৫০ হাজার টাকা, ঈদের সময় বাংলাদেশে সেই গরু বিক্রি হয় দেড় লক্ষ টাকায়। প্রতিটি গরুর জন্য চোরাচালানকারীরা ১০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন বলেও দাবি করা হয়েছে, বিএসএফ-এর এই বিবৃতিতে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন