২০১৭ সাল থেকে ভারতে জঞ্জাল পরিষ্কার করতে অথবা জল নিকাশি ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে গড়ে প্রতি পাঁচ দিনে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ন্যাশনাল কমিশন ফর সাফাই কর্মচারী'জ (এনসিএসকে)- এর পক্ষ থেকে সংগ্রহ করা হিসেব সেরকমটাই বলছে। এই প্রথম কায়িক শ্রম নিয়ে এ ধরণের সমীক্ষা হয়েছে। সমীক্ষার অধিকাংশ হিসেবই গণমাধ্যম এবং রাজ্য সরকারের নথি থেকে নেওয়া হয়েছে।
এনসিএসকে-এর হিসেব অনুযায়ী, বিপজ্জনক নানা ধরণের কাজ, যা একমাত্র কায়িক শ্রমের মূল্যেই করা সম্ভব, করতে গিয়ে ২০১৭ সাল থেকে ১২৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই রাজধানী এবং সংলগ্ন অঞ্চলে ৬ জন শ্রমিকের প্রাণহানি হয়েছে।
আরও পড়ুন, রাফালে চুক্তিতে হ্যাল বাদ পড়েছিল কংগ্রেস আমলে: প্রতিরক্ষামন্ত্রী
সারা দেশে নর্দমা এবং সেপ্টিক ট্যাঙ্কে কাজ করেন কত শ্রমিক, তার কোনো সরকারি হিসেব নেই। ২০১৩-র সংশোধিত আইন যদিও বলে এই ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের নথিভুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক। দেশের মোট ২৮ টি রাজ্য এবং সাতটি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে মাত্র ১৩টি রাজ্য এবং অঙ্গরাজ্য মজুরদের মৃত্যুর হিসেব রেখেছে। সমীক্ষার কাজে যুক্ত থাকা এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যেসব ক্ষেত্রে খবরের সূত্র হিসেবে খবরের কাগজকে ব্যবহার করা হয়েছে, সেক্ষেত্রেও শুধু হিন্দি এবং ইংরেজি খবর থেকেই তথ্য নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষায় প্রকাশিত খবরের কাগজে কোনও শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ছাপা হলেও হিসেবের বাইরে থেকে গেছে তা।
সমীক্ষার ফলাফল বলছে, নর্দমা বা সেপ্টিক ট্যাঙ্কে কাজ করতে গিয়ে সারা ভারতে যত শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তার রাজ্য ভিত্তিক তালিকা করলে শীর্ষে থাকবে হরিয়ানা। তারপর একে একে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাত। তালিকার একেবারে তলানিতে আছে মহারাষ্ট্র। সরকারি হিসেব বলছে ২০১৭ থেকে মাত্র দুটি মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে। অথচ এই রাজ্যেই এ ধরণের শ্রমিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মহারাষ্ট্রে ৬৫ হাজারেরও বেশি এমন পরিবার রয়েছেন, যেখানে প্রতি পরিবারে অন্তত একজন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।
কেন্দ্রীয় সরকারের 'সোশিও ইকোনমিক কাস্ট সেন্সাস (এসইসিসি) ২০১১'-তে শহরাঞ্চলের শ্রমিকদের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়নি। অতএব এনসিএসকে নথিতে মধ্যপ্রদেশের শ্রমিক মৃত্যুর কোনো হিসেব নেই। অথচ মহারাষ্ট্রের পর মধ্যপ্রদেশেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শ্রমিক নর্দমা এবং সেপ্টিক ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত।