দেশে করোনা ঝড় অব্যাহত। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে এর মধ্যেও উঠে এসেছে স্বস্তির খবর। দেশের মোট মৃত্যু সংখ্যা করোনা দ্বিতীয় ঢেউ তুলনায় অনেক কম। আর এতেই আশার আলো দেখেছেন চিকিৎসক মহল। যদিও এর আগেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবী করেছিলেন ওমিক্রনে মৃত্যু হার অত্যন্ত কম, মোট সংক্রমণের তুলনায়। দেশের মৃত্যুর সার্বিক পরিসংখ্যান দেখে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ কালে মৃত্যুর যে সংখ্যা সামনে এসেছে তা মোট আক্রান্তের তুলনায় সামান্যই।
করোনা দ্বিতীয় ঢেউ কালে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের মাঝামাঝি সময়ে, ভারতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ জনের বেশি করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সেখানে মোট সংক্রমণের হার ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে। এর মধ্যেই যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, গতবারের যে পরিসংখ্যান তাতে দেখা যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজারে পৌঁছাতে প্রায় একমাস সময় লেগেছে। অন্যদিকে করোনা তৃতীয় ঢেউকালে ২৮ ডিসেম্বর ১০ হাজারের গণ্ডি থেকে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ। মাত্র দু’সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড হারে বেড়েছে। মাত্র ১৪ দিনেই সংখ্যাটা পৌঁছেছে ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজারে। যা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগে রয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে মোট আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুহার যদি আগের বারের মত বৃদ্ধি পেত তাহলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেআব্রু ছবি আরও একবার সকলের সামনে উঠে আসত।
দেশের মতে মৃত্যুহার নিরিখে এগিয়ে কেরালা। চার মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতে সর্বাধিক সংখ্যক কোভিড-রোগীর মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে কেরলের মৃত্যুহারের দৈনিক গড় প্রায় ২৪২ জন। এই মৃত্যুর সংখ্যাই এখন কেন্দ্রের কাছে মাথাব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেরল ছাড়া বাকী রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। বরিবার স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুসারে মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গ যথাক্রমে ১৬, ১৭ এবং ১৮ জন রোগী করোনার বলি হয়েছেন। একই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট বা ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলিতে, গত তিন মাসে খুব কম মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ, দিল্লিতে বন্ধ হল রেস্তরাঁ-পানশালার দরজা
ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বিদ্যুৎ গতিতে বাড়লেও সেভাবে বাড়ছে না মৃত্যুর ঘটনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছে। অনেকের ক্ষেত্রে উপসর্গ খুবই সামান্য। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মৃত্যুর এই পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে আত্মতুষ্টি নয়, বরং আরও বেশি সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞমহল।