করোনা মোকাবিলায় গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোন চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি উঠেছে। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে একাধিক রাজ্য এই দাবি উত্থাপন করে। তারপরই জোন নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর মতামত জানতে চাইলো মোদী সরকার। আগামী ১৫ মে-র মধ্যে রাজ্যগুলোকে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে।
শীর্ষ এক সরকারি আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে, 'পরবর্তী জোন তালিকা নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর মতামত খতিয়ে দেখা হবে। সম্পূর্ণ জেলাকে একসঙ্গে কোনও জোনের অন্তর্ভুক্ত না করে, প্রশাসনিক অঞ্চলে ভেঙে ভেঙে জোন ঘোষণা করা হতে পারে।' উল্লেখ্য, আগামী ১৭ মে তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ১৮ মে থেকে লকডাউন চতুর্থ পর্বের লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গত সোমবারের বৈঠকে একাধিক রাজ্য জোন নির্ধারণের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায়। অনেক রাজ্যই আবার সম্পূর্ণ জেলার বদলে প্রশাসনিক অঞ্চল ভেদে জোন চিহ্নিতকরণের পক্ষপাতী। হু সহ বহু বিশেষজ্ঞের থেকেও এই পদ্ধতিতে জোন চিহ্নিতকরণের পরামর্শ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- মোদীর ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজের বিশদ ব্যাখ্যায় বিকেল ৪টে নির্মলার সাংবাদিক বৈঠক
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওই দিন বৈঠকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রথম এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, কেন্দ্রের বদলে রাজ্য বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে জোন নির্ধারণের কাজ ভাল করে করতে পারবে। কোথায় কী সমস্যা, কতটা ছাড় সম্ভব তা নির্ধারণ একমাত্র রাজ্যের পক্ষেই সম্ভব। এর ফলে লকডাউন ও আর্থনৈতিক কাজ চালানোর ক্ষেত্রে সমতা রাখা যাবে বলে জানান ক্যাপটেন অমরিন্দর সিং। জোন নির্ধারণের বর্তমান প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন কর্নাটক, দিল্লি, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীরাও।
কোন জেলা কী জোনে রয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল তার প্রথম তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্র। যা নিয়ে একাধিক রাজ্য সরাকর অসন্তোষ ব্যক্ত করেছিল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তীর্ব প্রতিবাদ জানান। সেই সময় মাত্র ২টি জেলাকে রেড জোনের অন্তর্ভক্ত করেছিল রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে প্রতিবাদ পত্রও দেওয়া হয়। পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান জোন ভাগের বিশদ বিবরণ দেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, 'করোনা সংক্রমণ, নমুনা পরীক্ষা ও সেরে ওঠার ভিত্তিতে এই জোন নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজ্য চাইলে রেড ও অরেঞ্জ জোনে রাজ্যের আরও জেলাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। তবে মন্ত্রক ছাড়া কোনও রাজ্য রেড বা অরেঞ্জ জোনে লকডাউন শিথিল করতে পারবে না।'
মে-র শুরুতে রেড জোনে ছিল ১৩০ জেলা, ২৮৪ জেলাকে অরেঞ্জ জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গ্রিন জোনের আওতায় ছিল ৩১৯ জেলা। বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ পজিটিভ ৭৪,২৮১ জন। স্বাস্থ্যমন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ৪৭,৪৮০। করোনা সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৪,৩৮৫ জন। করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে মোট ২৪১৫ জনের।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন