"অবৈধ দখল" এক সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে হবে। সংবাদ পত্রে নোটিস দেখেই মাথায় হাত দিশেহারা ৪ হাজার পরিবার। কোথায় যাবেন, তা ভেবেই পাচ্ছেন না তারা। উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানি রেলস্টেশনের কাছে অননুমোদিত কলোনিতে বসবাসকারী ৪ হাজার পরিবারের ঘুম উড়েছে। রেলের উচ্ছেদের নোটিসকে কেন্দ্র করে অজানা আতঙ্ক দিন কাটছে তাদের। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশেই রেলের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নোটিসের পর বাড়ি খালি করতে মাত্র সাত দিনের সময়। প্রবল ঠাণ্ডায় বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় উঠবেন জানেন না অধিকাংশ পরিবার। একরাশ আতঙ্ক আর হতাশা ঘিরে ধরেছে আদের।
নৈনিতাল জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর এলাকা থেকে মোট ৪,৩৬৫টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হবে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না করলে কোথায় গিয়ে উঠবেন পরিবারগুলি তা ভেবেই চোখে মুখে কালি পড়েছে বাসিন্দাদের। কিছু মানুষ আছেন যারা কয়েক দশক ধরে এই রেলের জমিতেই বসবাস করছেন এবং আদালতের আদেশের বিরোধীতায় সুর চড়িয়েছেন কেউ কেউ। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশের পরে, কুমাওন রেঞ্জের ডিআইজি নীলেশ আনন্দ ভরনে বলেছেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে বিভিন্ন সংস্থা এবং মানুষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা পুরো এলাকাকে জোন, সুপার জোন এবং সেক্টরে ভাগ করেছি। আমরা গুরুত্ব সহকারে সব জোন মূল্যায়ন কং। তিনি বলেন, “কোন সেক্টর জোনে কতগুলো বাড়ি আসছে এবং কীভাবে সেগুলো সরানো হবে তাও মূল্যায়ন করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও অতিরিক্ত ফোর্স চাওয়া হয়েছে। আমরা সেন্ট্রাল প্যারা মিলিটারি ফোর্সের ১৪টি কোম্পানিও চেয়েছি। উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৪-৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
রেলের আধিকারিকরা বলেছেন, ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে নির্মিত বাড়ি ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রাজেন্দ্র সিং, রেলওয়ের পিআরও, ইজ্জাত নগর, বলেন, “প্রায় ১০ দিন আগে, হাইকোর্ট উচ্ছেদের পক্ষে রায় দেন। ৪,৩৬৫টি পরিবার রেলের জমিতে দির্ঘদিন ধরে ছিলেন। আমরা রবিবার স্থানীয় সংবাদপত্রে উচ্ছেদ অভিযানের নোটিশ দেব। দখলকারীদের সরে যাওয়ার জন্য জন্য সাত দিন সময় দেওয়া হবে। এরপর আমরা ব্যবস্থা নেব”।
শুনানির সময়, ‘রাজ্য সরকার বলেছিল যে রেলের উল্লিখিত সম্পত্তি সম্পর্কে তাদের কিছু বলার নেই। রেলের তরফে আরও বলা হয়েছে কোনও দখলদার উল্লিখিত জমি নিজেদের বলে দাবি করার জন্য কোনও আইনি নথি উপস্থাপন করতে পারবে না। প্রায় এক দশক ধরে চলা একটি মামলায় সব পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রেলের পক্ষে রায় দেন।
আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রেলওয়ে ও ভূমি রাজস্ব কর্মকর্তাদের একটি যৌথ দল স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মধ্যে তিনি দখলকৃত এলাকা সীমানা নির্ধারণ শুরু করেন। অন্যদিকে কংগ্রেস এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে, হাজার হাজার বাসিন্দা তাদের প্রতিবাদ জোরালো করতে করতে একটি মোমবাতি মিছিল বের করে। তারা বলেছে এই উচ্ছেদ অভিযান তাদের গৃহহীন করবে। কিছু পরিবার প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে অননুমোদিত কলোনিতে বসবাস করছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই চোখের সামনে সবটাই ভেঙে ফেলা হবে বলেই আশঙ্কা বাসিন্দাদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০টি মসজিদ ও ৯টি মন্দিরও রয়েছে ওই এলাকায়। এলাকার বাসিন্দারা দাবি করেছেন, প্রায় একশ বছর ধরে মানুষ এখানে বসবাস করছেন। এখানে ৭০ বছরের পুরনো মসজিদ ও মন্দির রয়েছে। সরকার জমিতে স্কুল ও হাসপাতাল তৈরি করেছে, কিন্তু তারা তার নাগরিকদের কথা চিন্তা করেনি।