সারা পৃথিবী তাঁকে চেনে মণিপুরের লৌহমানবী হিসেবে। সে রাজ্যের আফস্পা আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর অনশন চালিয়েছিলেন ইরম শর্মিলা চানু। রবিবার সকালে বেঙ্গালুরুর ক্লাউড নাইন হাসপাতালে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ইরম।
১৬ বছরের অনশন প্রত্যাহার করে ২০১৬ সালে শর্মিলা কোদাইকানাল চলে গিয়েছিলেন। বিয়ে করেন ব্রিটিশ নাগরিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে। গত বছর থেকে ডেসমন্ড এবং শর্মিলা চলে যান বেঙ্গালুরুতে। সদ্যজাত দুই কন্যার নাম রেখেছেন নিক্স সখি এবং অটম তারা।
হাসপাতাল থেকে ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে শর্মিলা জানালেন, "আমার জন্য এটা একটা নতুন জীবন, নতুন একটা শুরু। ছেলে, মেয়ে নিয়ে আমাদের আলাদা কোনও পছন্দ ছিল না। আমরা সুস্থ সন্তান চেয়েছিলাম"। "আমার সন্তানেরা আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবসে জন্মেছে। তাই আমি দ্বিগুণ খুশি। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন, ‘ভারতে সংগঠন মজবুত হয়েছে’, আইএস-এর দাবি উড়িয়ে দিল জম্মু কাশ্মীর পুলিশ
নিক্স সখির নাম দেওয়া হয়েছে ইরমের শর্মিলার মা ইরম সখির নাম থেকে। মাস কয়েক আগে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। "মায়ের কথা আমার ভয়ঙ্কর ভাবে মনে পড়ে, মা'কে যদি খবরটা জানাতে পারতাম", বললেন শর্মিলা। বললেন, "নিক্স নামটা আমার স্বামীর দেওয়া। লাতিনে নিক্সের অর্থ তুষার। ডেসমন্ড চান আমাদের সন্তান যেন তুষারের মতো ঠাণ্ডা এবং শান্ত হয়। অটম তারা নামটি নেওয়া বৌদ্ধ দেবীর থেকে"।
২০০০ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হয় ইরমের প্রতিবাদী পথ চলা। টানা ১৬ বছর ধরে মণিপুরের আফস্পা আইনের বিরুদ্ধে চালিয়ে যান অহিংস আন্দোলন। আফস্পা মুক্ত মণিপুরে মায়ে মেয়েতে দেখা হবে, এই ছিল পণ। লড়াইয়ের দীর্ঘ সময় জুড়ে তাই মায়ের সঙ্গেও দেখা হয়নি শর্মিলার।
২০১৭ তে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ ইরমের। ভেবেছিলেন ক্ষমতায় এসে আফস্পা আইন তুলে নেবেন। কিন্তু নির্বাচনে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভয়াবহ হার হয় তাঁর। মাত্র ৯০ টি ভোট পেয়ে হতাশ ইরম জানিয়েছিলেন যে মানুষদের জন্য জীবনভর লড়াই করলেন, তাঁরাই তাঁকে ভুল বুঝেছে।
Read the full story in English