Advertisment

চলন্ত ট্রেনের নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুবতীর প্রাণ বাঁচিয়ে ‘হিরো’ কাঠমিস্ত্রি

মোহম্মদ মেহবুব নামের কাঠমিস্ত্রি নিজের জীবন বাজি রেখে রেললাইনে পড়ে যাওয়া যুবতীকে বাঁচাতে চলন্ত ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চলন্ত ট্রেনের নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুবতীর প্রাণ বাঁচিয়ে ‘হিরো’ এক কাঠমিস্ত্রি

নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যের জীবন বাঁচিয়ে নজির গড়লেন বছর ৩৭-এর কাঠমিস্ত্রি মহম্মদ মেহবুব। চলন্ত ট্রেনের নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন বাঁচিয়েছেন এক যুবতীর। সেই সঙ্গে দিয়েছেন অসীম সাহসিকতার পরিচয়ও। তাঁর সাহসিকতার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যপুলিশের তরফে মিলেছে সম্বর্ধনাও!  

Advertisment

ট্রেন লাইনে পড়ে জাওয়া এক মহিলাকে বাঁচানোর সেই ভিডিও ভাইরাল হতে চমকে উঠেছেন অনেকেই সঙ্গে ব্যক্তির প্রশংসা করেছেন। মহম্মদ মেহবুব নামের এক ব্যক্তি যিনি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। তিনি মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বারখেদি এলাকায় তার কারখানার দিকে হাঁটছিলেন যখন তখন এই ঘটনা ঘটে।

৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি দেখেন সামনে দিয়ে একটি মালগাড়ি এগিয়ে আসছে। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। তবে ৩৭ বছর বয়সী ব্যক্তি দেখেন একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির মাঝখান দিয়ে ট্রেন লাইন পেরোতে গিয়েছিলেন, কিন্তু হঠাত সে ট্রেন লাইনের উপর পড়ে যায়। এবং পণ্যবাহী ট্রেনটি মেয়েটির দিকে গড়িয়ে আসতে শুরু করে।

এরপরে যে ঘটনা ঘটেছে তা দেখেই সকলের মেরুদণ্ড দিয়ে হিমেল স্রোত বয়ে গিয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের নেওয়া সিদ্ধান্তে বেঁছে মেয়েটির প্রান। প্রতক্ষ্যদর্শীদের মতে মেয়েটি লাইনের ধারে পড়ে যাওয়ার পরে উঠতে চেষ্টা করার সময়েই মোহম্মদ মেহবুব নামের কাঠমিস্ত্রি নিজের জীবন বাজি রেখে রেললাইনে পড়ে যাওয়া যুবতীকে বাঁচাতে চলন্ত ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দেন।

যুবতীকে টেনে নেন ও লম্বা হয়ে শুয়ে যান যাতে উপর দিয়ে ট্রেন গেলেও তাঁদের ক্ষতি না হয়। মেয়েটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মেহবুব নিজের মাথা ও মেয়েটি মাথা নিচু করে রেখেছিলেন। বর্তমানে দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন। এই ঘটনার পর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই।

মহম্মদ মেহবুব পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাঁর একার এয়ে চলে সাত-সাতটি পেট। ওসবের তোয়াক্কা না করে অচেনা এক মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে যেভাবে তিনি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। মেহবুব জানান, “ আমি ভেবেছিলাম, মেয়েটি চিৎকারে আতঙ্কিত হতে পারে যা তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে আমি কোন কিছুর পরোয়া না করেন ঝাঁপ দিয়ে মেয়েটির মাথায় নিজের হাত রাখি, এবং চেষ্টা করি যাতে কোন ভাবেই ও মাথা তুলতে না পারে। মাথা তুললেই নির্ঘাত মৃত্যু!’

এদিকে সাক্ষাত মৃত্যু মুখ থেকে বেঁচে ফিরে স্নেহা জানিয়েছেন, “আমি রেললাইনের ওপর পড়ে গিয়েছিলাম, ইতিমধ্যেই ট্রেনের ২৮টি বগি আমার ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে। আমি দেখতে পাচ্ছিলাম, আমার ভাই ট্র্যাকের ওপারে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিচ্ছু করার উপায় ছিল না। আমি মাথা তুলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম যে আমি নিরাপদ। কিন্তু উনি আমাকে মাথা তুলতে বারণ করেছিলেন। উনি আমাকে বলেছিলেন, মাথা না তুলতে”।

এদিকে মেহবুবের সাহসিকতার জন্য ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশের তরফে তাকে সম্বর্ধনাও দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে স্নেহার মা শ্যামা জানিয়েছেন, “দু সপ্তাহ আগে ওখানেই একজন ট্রেনে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিল। আমার মেয়ে এবং আমি দুজনেই ভাগ্যবান বড় কোন বিপদ হয়নি। যিনি আমার মেয়ের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ”। 

Read story in English

Train Accident Bhopal Mohammad Mehboob Save young girl
Advertisment