জম্মু ও কাশ্মীরের ডেপুটি সুপারিনটেন্ডন্ট দভিন্দর সিং গ্রেফতার হওয়ার একদিন পর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ২০০১ সালের সংসদ হামলার যাবতীয় তদন্তের জন্য জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (এনআইএ)-কে এই তদন্তভার নেওয়ার সুপারিশ করল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। বুধবার ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ দিলবাগ সিং বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই এনআইএকে এই তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছি যাতে এই তদন্তের বিস্তারের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলিও সামনে আসে। দভিন্দর সিংকে সাময়িক তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা হলেও, ডিজিপি জানিয়েছেন যে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশও জানানো হয়েছে ইতিমধ্যে। এমনকী ২০১৮ সালে যে পদক দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করে জম্মু-কাশ্মীর তা ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেনারেল অফ পুলিশ দিলবাগ সিং।
তবে শুধু তো আফজল গুরুর সঙ্গে যুক্ত নয়, সবচেয়ে চর্চিত বিষয় ২০০১ সালে সংসদ হামলার সঙ্গে দভিন্দর সিংয়ের যুক্ত থাকা। এ প্রশ্নের জবাবে ডিজিপি বলেন, "তদন্ত চলাকালীন এই বিষয়টি সামনে আসলে তা নিয়েও সবরকম তদন্ত করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে তিহার জেল থেকে লেখা এক চিঠিতে সন্ত্রাসের অভিযোগে কারাবন্দি আফজল গুরু জানায়, “ডিএসপি দভিন্দর সিং”, যিনি সেসময় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপের সঙ্গে হুমহামায় মোতায়েন ছিলেন, আফজলকে বলেন যেন সে “মহম্মদকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি যায়, তার থাকার জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেয়, এবং তাকে গাড়ি কিনে দেয়”। সন্ত্রাসের অভিযোগে আফজল গুরুর ফাঁসি হয় ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে। উল্লেখ্য, যে মহম্মদের কথা বলা হয়েছে, সে পাকিস্তানি নাগরিক, যাকে সংসদ ভবনের হামলাকারীদের একজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসীদের গাড়িতে পুলিশের শীর্ষকর্তা, কে এই দভিন্দর সিং?
উল্লেখ্য, সংসদ হামলার মূলচক্রী হিসেবে অভিযুক্ত আফজল গুরুকে দোষী সাব্যস্ত করে ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ সালে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। তবে কোন কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িত দভিন্দর সিং সে বিষয়েও তদন্ত করবে এই বিশেষ তদন্তকারী দল। ডিজিপি বলেন, "আমরা কাউকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বাস করি না। কোন পদ বা সংস্থা নির্বিশেষে এ জাতীয় অপরাধে জড়িত যে কারুর বিষয়কে প্রশ্রয় দেব না।" তিনি আরও জানান যে দভিন্দর সিংয়ের গ্রেফতারের পরই বহু জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। চলছে তদন্তও।
প্রসঙ্গত, রবিবার গোটা একটা দিন নীরব থাকার পর সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ স্বীকার করে নেয়, শীর্ষ হিজবুল মুজাহিদিন নেতা সৈয়দ নভীদ মুশতাক এবং তার সহযোগীদের সঙ্গে একটি প্রাইভেট গাড়িতে শনিবার সন্ধ্যায় শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কের একটি চেকপোস্ট থেকে গ্রেফতার হন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সম্মানিত অফিসার দভিন্দর সিং। ধৃত অফিসার শ্রীনগর বিমানবন্দরে হাইজ্যাকিং প্রতিরোধ শাখায় কর্মরত ছিলেন।
Read the full story in English