আনন্দ শর্মা, রাহুল গান্ধী ও সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
মোদী সরকারের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা সোমবার জানিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা ধাপে ধাপে কেন্দ্রকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আরবিআই। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির এই সিদ্ধান্ত নিয়েই এবার একযোগে সরব হল বিরোধীরা। আরবিআই-এর এই সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে মোদী সরকারকে নিশানা করেছে কংগ্রেস-সিপিএম।
Advertisment
কেন্দ্রের হাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এদিন টুইট করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি লিখেছেন, ‘‘নিজেদের তৈরি করা আর্থিক দূরাবস্থা থেকে কীভাবে বেরোবেন, সে নিয়ে কোনও দিশা খুঁজে পাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী। আরবিআই-এর থেকে চুরি করেও কোনও লাভ হবে না। এটা অনেকটা, কোনও ওষুধের দোকান থেকে ব্যান্ড-এড চুরি করার মতো। যা কোনও গুলির ক্ষতচিহ্নে লাগানো হবে’’।
PM & FM are clueless about how to solve their self created economic disaster.
Stealing from RBI won’t work - it’s like stealing a Band-Aid from the dispensary & sticking it on a gunshot wound. #RBILootedhttps://t.co/P7vEzWvTY3
শুধু কংগ্রেসই নয়, সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘এর আগে কখনও এতটা নির্দয়ভাবে অর্থনীতিকে অপমান করা হয়নি’’। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সাল থেকে মোদী সরকার নিজেদের প্রচারের জন্য আরবিআই-এর মুনাফার ৯৯ শতাংশ ব্যবহার করছিল। কটাক্ষের সুরে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘মোদীর কাছের মানুষদের লুঠ করা ব্যাঙ্কগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা কাজে লাগানো হবে’’।
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, গভীর আর্থিক সংকটে রয়েছে ভারত। দেশের জিডিপি ক্রমশ নিম্নমুখী। টাকার অবস্থাও খুব খারাপ। শিল্পও বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকার পরিমাণ কমবে। জয়রাম রমেশ টুইটারে লিখেছেন, ‘‘উর্জিত প্যাটেল ও বিরল আচার্য দুর্গে হয়ে ছিলেন। তাঁদের জোর করে সরানো হয়। ফলে এখন দুর্গ ভেঙে গিয়েছে...’’।
Urjit Patel & Viral Acharya held the fort. They were forced to leave. The fort was breached. The Govt of India now usurps a huge windfall from the RBI going contrary to what the central bank's own think tank CAFRAL had said. Fiscal breathing space but at what and whose cost?
উল্লেখ্য, কেন্দ্রকে আর্থিক সাহায্য (উদ্বৃত্ত মূলধন হস্তান্তরের মাধ্যমে) করতে রাজি হননি বলেই আরবিআই গভর্নরের পদ থেকে সরতে হয়েছিল উর্জিত প্যাটেলকে, এমনটাই শোনা যায়। যদিও, উর্জিত 'ব্যক্তিগত কারণ' দেখিয়েই ইস্তফা দিয়েছিলেন। উর্জিত প্যাটেল আরবিআই-এর গভর্নর থাকাকালীনই এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির সংঘাত চরমে পৌঁছেছিল। পরে মেয়াদ শেষের আগেই আচমকা ইস্তফা দিয়ে দেন উর্জিত প্যাটেল। শেষমেশ আরবিআইয়ের বর্তমান গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের জমানাতেই এই ‘বড়’ সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরবিআই?
কেন্দ্রকে ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য করার কথা সোমবার জানিয়েছে আরবিআই। ইকোনমিক ক্যাপিটাল ফ্রেমওয়ার্কের পর্যালোচনার পরই ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে উদ্বৃত্ত হিসেবে ১.২৩ লক্ষ কোটি টাকা ও অতিরিক্ত খাতে আরও ৫২ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আরবিআই। আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ওই পরিমাণ অর্থ ধাপে ধাপে কেন্দ্রকে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।