নয়া সংসদভবনের ছাদে উন্মোচিত অশোক স্তম্ভের সিংহগুলি কি হিংস্র? শ্বদন্ত পশুরাজের মুখ নিয়ে আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দেশের জাতীয় প্রতীক অবমাননার অভিযোগে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। এই পরিস্থিতি ড্যামেজ কন্ট্রোলে মাঠে নামল কেন্দ্র। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আবাসন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর দাবি, এই সিংহগুলি সারনাথের অশোক স্তম্ভের অবিকল অবয়ব, শুধু আকারটা বড়। যদি সারনাথের অশোক স্তম্ভকে উঁচু করা হয় বা নয়া সংসদভবনের মূর্তির সাইজ ছোট করা হয় তাহলে কোনও পার্থক্য থাকবে না।
এদিন হরদীপ পুরী বলেন, "মূর্তির আকার এবং উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও বদল হয়নি। সৌন্দর্য কে কী ভাবে দেখবে তাঁর উপর নির্ভর করছে। তবে শান্ত এবং রাগী সিংহ বিতর্কে বলতে চাই, আসল সারনাথের প্রতীক ১.৬ মিটার লম্বা ছিল। সেটা নয়া সংসদভবনের মূর্তির ক্ষেত্রে ৬.৫ মিটার করা হয়েছে। এটাই যা পার্থক্য। যদি আসল মূর্তির আকারে নতুনটি তৈরি করা হত, তাহলে দূর থেকে তা দেখা যেত না। বোদ্ধাদের এটাও জানা উচিত, সারনাথের স্তম্ভগুলি মাটিতে স্থাপিত ছিল, আর নয়া স্তম্ভ মাটি থেকে ৩৩ মিটার উঁচুতে রয়েছে। দুটিকে পাশাপাশি রেখে তুলনা করা উচিত। সারনাথের মূর্তিগুলিকে নীচ থেকে দেখলে শান্ত না রাগী সেটা ভাল বোঝা যাবে।"
উল্লেখ্য, বিরোধীদের দাবি, জাতীয় প্রতীকের অবয়ব পাল্টে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ ছুড়ে তাদের দাবি, সংবিধান অবমাননা করেছেন জাতীয় প্রতীক নিয়ে ছেলেখেলা করে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, সারনাথের অশোক স্তম্ভের সিংহগুলির চরিত্র পাল্টে দেওয়া দেশের জাতীয় প্রতীকের অপমান। ২০০৫ সালের জাতীয় প্রতীক আইন লঙ্ঘন করেছে কেন্দ্র, অভিযোগ বিরোধীদের। এই আইন অনুযায়ী, দেশের জাতীয় প্রতীকের নকশা পাল্টানো যায় না।
আরও পড়ুন Explained: নতুন সংসদভবনের অশোক স্তম্ভেও বিতর্কের হাওয়া, ভবন-কথা জানেন?
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি বলেছেন, "মোদীজি দয়া করে সিংহের মুখগুলি দেখুন। এগুলি কি সারনাথের সিংহ না কি গির অরণ্যের সিং! ভাল করে দেখুন, সেভাবে পাল্টে দিন মুখগুলো।" তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারও আক্রমণ শানিয়েছেন সরকারকে। টুইট করে বলেছেন, "আমাদের জাতীয় প্রতীকের অপমান, অশোকের সিংহের অপমান! আসল সিংহগুলো শান্ত, আত্মবিশ্বাসী, ধৈর্যশীল। আর অন্যদিকে মোদীর সংস্করণ হল হিংস্র, গর্জনরত, অহেতুক আগ্রাসী এবং আকারও ভুল। লজ্জার বিষয়, দ্রুত এটা পাল্টানো হোক।"