আগামী ৫ এপ্রিল, রবিবার, রাত ন’টায় ৯ মিনিট সময়ের জন্য বাড়ির সমস্ত বৈদ্যুতিন আলো বন্ধ করে ঘরে ঘরে বা বারান্দায় মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালানোর আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পারস্পরিক সংহতির স্বার্থেই এই আহ্বান বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর এই ভিডিও বার্তার পর পরই তাঁর বিরুদ্ধে সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের আর্জিকে 'প্রতীকী' বলে সম্বোধন করেন তাঁরা। ভয়ঙ্কর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ত্রাণ ব্যবস্থা বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চান বিরোধী নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় বলেছেন, '১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগরণ করতে হবে। মহাসঙ্কল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। তাই ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ন’টায় আমি আপনাদের সকলের ন’মিনিট চাইছি। ওই সময়ে আপনারা ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ করে ঘরের দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ৯ মিনিট ধরে মোমবাতি, প্রদীপ, বা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালান। এর দ্বারাই পারস্পরিক সংহতি প্রকাশ পাবে।'
আরও পড়ুন: LIVE- দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৩০১, রবিবার বাতি প্রজ্বলনের আর্জি মোদীর
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ পি চিদাম্বরম মোদীর এদিনের আর্জিকে কেন্দ্র করে একাধিক টুইট করেছেন। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাবি জানিয়ে টুইটে তিনি বলেছেন যে, 'আমরা আপনার কথা শুনে বাতি জ্বালাব। কিন্তু আপনিও অর্থনীতিবিদ এবং মহামারী-বিশেষজ্ঞদের কথা শুনুন। শ্রমিক-ব্যবসায়ী, দিনমজুররা আসা করেছিলেন যে, ধস এড়িয়ে আপনি অর্থনৈতির ইঞ্জিন ঊর্ধ্বমুখী করতে পদক্ষেপের ঘোষমা করবেন। কিন্তু, এদিন সবাই হতাশ হল।'
Every working man and woman, from business person to daily wage earner, also expected you to announce steps to arrest the economic slide and re-start the engines of economic growth.
— P. Chidambaram (@PChidambaram_IN) April 3, 2020
কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুর নরেন্দ্র মোদীকে 'ছবি সর্বস্ব প্রধানমন্ত্রী' বলে কটাক্ষ করেছেন। টুইটে তিনি লেখেন, 'প্রধান শো-ম্যানের কথা শুনুন। সেখানে মানুষের যন্ত্রণা, তাদের দায়, আর্থিক উদ্বেগ নিয়ে কোনও কথা নেই। ভবিষ্ঠতে বা লকডাউনের পরে কী হবে তার কোনও দিশা প্রধানমন্ত্রীর কথায় ধরা পড়ল না। এদিন সকালে শুধুমাত্র যেন একটা শুভ সময় দেখানোর চেষ্টা করে গেলেন ছবি সর্বস্ব প্রধানমন্ত্রী!'
Listened to the Pradhan Showman. Nothing about how to ease people’s pain, their burdens, their financial anxieties. No vision of the future or sharing the issues he is weighing in deciding about the post-lockdown. Just a feel-good moment curated by India’s Photo-Op PrimeMinister!
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) April 3, 2020
টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন আরেক প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল।
Modiji
Learnt nothing about government’s steps to
1) contain the virus
2) protect our medical practitioners
3) provide testing kits
4) reach food and supplies to the poor
5) finance migrant labour , the joblessLight the ‘ Diya ‘ of reason
Not that of superstition !— Kapil Sibal (@KapilSibal) April 3, 2020
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে আগামী রবিবার রাত ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর বাতি, প্রদীপ জ্বালানোর আর্জির বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। টুইটে মোদীকে বাস্তববাদী হওয়ার আবেদন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, 'এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় আয়ের ৮-১০ শতাংশের প্যাকেজ ঘোষণা করুন। আইন মেনে লকডাউন চলাকালীন নির্মাণ ও অন্যান্য কাজের সঙ্গে শ্রমিকদের জন্য তাৎক্ষণিক মজুরি নিশ্চিত করুন। ভুয়ো খবরের জন্য সংবাদ মাধ্যমকে ঠেকানোর চেষ্টা বন্ধ করুন।'
Turn out lights & come on balconies?
GET REAL MR. MODI!
Give India fiscal pkg worth 8-10pc of GDP
Ensure immediate wages to construction & other labour during lockdown- laws exist permitting this
Stop gagging real press in name of curbing fake news
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) April 3, 2020
এনসিপি নেতা নবাব মালিক মোদীর আর্জিকে 'দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি উপহাস' বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, 'প্রদানমন্ত্রীর আর্জি আসলে নির্বোধের রাজনৈতিক গিমিক। গরীবরা কীভাবে উনুনে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করবেন তা দেখার বদলে বাতি জ্বালানোর আবেদন করছেন তিনি।'
বিরোধীদের এই কটাক্ষের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে দলের নেতা বি এল সন্তোষ 'অভিভাবক' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'উনি এই দুর্দিনে দেশবাসীর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি ও হাত ধরে তাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।' তাঁর সংযোজন, 'প্রতিদিনই প্রতিটি প্রশ্নের যুক্তিনির্ভর জবাব ও পরিসংখ্যান দিচ্ছে কেন্দ্র। বিরোধীরা সেইসব শুনতে বা বুঝতে রাজি নয়।'
Read the full story in English