/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/10/cats-64.jpg)
মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের তরফেও একটি প্রেস রিলিজ সামনে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) র্যাডারে ভারতে তৈরি চারটি কাশির সিরাপ! এই সিরাপগুলি ব্যবহারে ইতিমধ্যেই একটি সতর্কতা জারি করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। কেন এই সতর্কতা? WHO জানিয়েছে এই সিরাপগুলির মধ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পাওয়া গেছে, যা বিষাক্ত এবং সম্ভাব্য মারাত্মক। দিন কয়েক আগেই আফ্রিকায় ৬৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়। তারপরই এই কাশির সিরাপ ব্যবহারে সতর্কতা জারি করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
এবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার স্ক্যানারে থাকা সিরাপ নিয়ে মুখ খুলল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে জানান হয়েছে এই কাশির সিরাপগুলি ভারতের কোথাও বিক্রি হয়নি। পাশাপাশি মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের তরফেও একটি প্রেস রিলিজ সামনে এসেছে।
শনিবার এক বিবৃতি জারি করে সংস্থা জানায় শিশু মৃত্যুর খবরে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। পাশাপাশি সংস্থা আরও জানিয়েছে, “আমরা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওষুধ তৈরির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (ভারত) সহ সমস্ত স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা অনুসরণ করেই কাজ করে চলেছি। কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রেও সংস্থা নামী সংস্থার ওপর নির্ভর করে।
সংস্থাটি আরও বলেছে যে কাশির সিরাপগুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেগুলি ভারতে বিক্রি হয়না। কোম্পানির যে কাশি সিরাপগুলি স্ক্যানারের আওতায় এসেছে সেগুলি হল প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফ্যাক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিন এন কোল্ড সিরাপ।
পাশাপাশি সংস্থা আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কাশির সিরাপের নমূনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সরকারি স্তর থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও এসেছে। আমরা সব সময়ে সরকারকে সব রকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই চলতি মাসে তিন দিন কোম্পানি পরিদর্শনে আসেন সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের কর্মকর্তারা”।
এদিকে বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ডব্লিউএইচও-র বিবৃতিতে একটি আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে যে এই চারটি কাশির সিরাপ ভারতের কোথাও বিক্রি হয়নি। এই পণ্য রপ্তানির অধিকার শুধুমাত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের। স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, “কোম্পানি এই সিরাপগুলি তৈরি করেছে এবং শুধুমাত্র গাম্বিয়াতে রপ্তানি করেছে। গাম্বিয়াতে রপ্তানি করা কাশির সিরাপ ভারতের কোথাও বিক্রি বা বিতরণ করা হয় না। কোম্পানি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই রিপোর্ট আসবে। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে”।
আরও পড়ুন: < রাজ্যপালের মেয়াদ শেষ হতেই, অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০০ কোটির দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই >
সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO) এর একটি প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে যে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড হরিয়ানা সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত। সংস্থা Promethazine Oral Solution BP, Cohexanaline Baby Cough Syrup, Macoff Baby Cough Syrup এবং Magrip N Cold Syrup এই চারটি কাশির সিরাপ তৈরি করেছে এবং এই কাশির সিরাপগুলি কেবলমাত্র গাম্বিয়াতেই রপ্তানি করা হয়। ভারতের অন্যত্র আর কোথাও এই সিরাপ বিক্রি করা হয়নি বলেই জানান হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে।
ডাব্লুএইচও বলেছে, “গাম্বিয়াতে যে ৬৬ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে তার সঙ্গে সরাসরি এই কাশির সিরাপের যোগসূত্রের সম্ভাবনা রয়েছে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে”। মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ভারতে তৈরি চারটি কাশির সিরাপ নিয়ে সাবধানতা জারি করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। এই চারটি সিরাপ হল প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কোফ্যাক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ। এই সমস্ত সিরাপগুলি হরিয়ানার মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের তৈরি।
WHO-এর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে চারটি পণ্যের প্রতিটির নমুনার বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, এই সিরাপগুলিতে ক্ষতিকারক ডায়েথিলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন রয়েছে। যেগুলো সেবন করা মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
বিশেষ সতর্কতায় ডব্লিউএইচও বলেছে যে এই সমস্ত সিরাপ অনিরাপদ এবং সেগুলির ব্যবহারে বিশেষ করে শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও বলা হয়েছে যে এই সিরাপ খেলে পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন এবং কিডনির সমস্যার মত লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যা অনেকক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ হতে পারে।