বিহারের সারণ জেলায় বিষমদ খেয়ে মৃত্যুমিছিলের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু 'ড্রাই' বিহারে বার বার কেন মদ খেয়ে মৃত্যু, তা ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। বিহারে বিষমদের কারণে মৃত্যুমিছিল নতুন কিছু নয়। ২০১৬ সালের গোপালগঞ্জ জেলার খাজুরবানিতে বিষমদ খেয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই বছরই এপ্রিলে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ হয়। তার পর অগস্টে এত বড় ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়।
তবে সে বছর জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি-র তথ্য অনুযায়ী, ৬ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছিল বিহারের প্রশাসনের তরফে। বিহারে বিষমদে মৃত্যুর তথ্য চাপা দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এনসিআরবি ডেটায় মাত্র ২৩ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে বিষমদের কারণে। ২০১৬ সালে ৬ জন, ২০১৭ সালে একটিও নয়, ২০১৮ সালেও তাই, ২০১৯ সালে ৯ জন, ২০২০ সালে ৬ জন এবং গত বছর ২ জন।
তবে বাস্তবে এই ৫ বছরে রাজ্যে ২০টির মতো বিষমদ কাণ্ড হয়েছে। যার ফলে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধুমাত্র ২০২১ সালেই ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ৯টি ঘটনায়। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের হাতে আসা তথ্য সেটাই বলছে। গত বছর তিনটি বড় ঘটনা হয়েছিল। ভাগলপুরে মার্চের ২২-২৩ তারিখে ২২ জনের মৃত্যু হয়। নভেম্বরের ২-৩ তারিখে গোপালগঞ্জে ২০ জনের মৃত্যু হয়। আবার ৪ তারিখে ওই জেলাতেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার এবং শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার অন্য রাজ্যেও বিষমদে মৃত্যুর তুলনা টানেন বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে। যেখানে বিহারে মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বার বার মৃত্যুমিছিল চরমে পৌঁছেছে। সারণেই অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত তিনদিনে সিওয়ান জেলায় ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন বিষমদ কাণ্ডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে না সরকার, সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই প্রসঙ্গে বিহারের অতিরিক্ত ডিজিপি জিতেন্দ্র সিং গাংওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, কিন্তু তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১০টি বিষমদ কাণ্ড হয়েছে। যার মধ্যে দুটি সারণে এবং তিনটি নালন্দায় হয়েছে।
শুক্রবার বিহারের শাসকদল সংযুক্ত জনতা দল ঘোষণা করে যে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিহার যাত্রায় বেরোবেন রাজ্যের মানুষকে মদ্যপানের বিরুদ্ধে সচেতন করতে। ওইদিনই বিধানসভায় নীতীশ বলেছেন, "আমি গোটা রাজ্যে সফর করে মানুষকে বলতে চাই মদ্যপানের পরিণাম কত ভয়ঙ্কর।"