গত কয়েক মাস ধরে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। এর মাঝেই আইনমন্ত্রী কিরেন রিজ্জুর করা সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের জেরে সরব ৩০০-এর বেশি সিনিয়র আইনজীবী। কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও বিচারবিভাগের মধ্যে চলমান দ্বন্ধের মাঝে আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর একাধিক বক্তব্য সামনে এসেছে। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার উত্তাল হয় বিচারবিভাগ। তবে এবারের আইনমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে ৩০০ জনেরও বেশি সিনিয়র আইনজীবী।
আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে কিছু অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ভারত বিরোধী প্রচারের অংশ হয়ে উঠেছে। এক যৌথ বিবৃতিতে আইনজীবীরা বলেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বার্তা কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। সরকারের কাজের সঙ্গে কোন বিষয়ে ঐক্যমত না হলে ভিন্নমত বরদাস্ত করা হবে না। আইনমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য গণতান্ত্রিক দেশে শোভা পায়না। আইনজীবী তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
আইনজীবীরা বলেছেন, মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য কোনভাবেই শোভা পায় না। আমরা মন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে পারি যে সরকারের সমালোচনা, না দেশবিরোধী, না ভারতবিরোধী। সরকার চায় বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করুক, কিন্তু কলেজিয়ামে এমন কোন নিয়ম নেই। আইনজীবীদের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে আইনমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের "স্পষ্টভাবে হুমকি" দিয়েছেন এবং "সাংবিধানিক শালীনতার সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছেন"।
আইনজীবীরা রিজিজুকে মনে করিয়ে দেন যে একজন সংসদ হিসাবে তাঁর সংবিধানের প্রতি অনুগত থাকা উচিৎ তএবং আইন মন্ত্রী হিসাবে তার বিচার ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ এবং বিচারপতিদের সম্মান ও তাদের প্রতি তিনি দায়বদ্ধ। সরকার চায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্ণ হস্তক্ষেপ থাকুক। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের উপর রিজ্জুর মন্তব্যকে অযৌক্তিক বলেও উল্লেখ করেন আইনজীবীরা।
তারা বলেছেন “আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিশোধের হুমকি আমাদের মহান সংবিধানের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছে”।