রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ইঙ্গিতপূর্ণ বৈঠক, সুদান ও ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার পর সুদানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার (২১ এপ্রিল) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুদানের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেন। ঈদের আগে সুদানে ৭২ ঘন্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যে, প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় নাগরিকদের সুদান থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর জন্য সমস্ত বিকল্পের বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদির সভাপতিত্বে এই উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান এবং সুদানে ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং আরও অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি সুদানের যুদ্ধপরিস্থিতি এবং সেদেশে আটকে থাকা তিন হাজারের বেশি ভারতীয়’র ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী সুদানে এক ভারতীয়’র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। কেরালার বাসিন্দার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মোদী বৈঠকে, সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সতর্ক থাকতে এবং সেখানকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন। এছাড়াও সুদানে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ জন্য দূতাবাস এবং বিদেশ মন্ত্রকের কন্ট্রোল রুমকে সুদানে আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখতে বলা হয়েছে। দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে, প্রধানমন্ত্রী জরুরি কৌশল এবং বিশেষ করে তাদের সুদান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন বিকল্পের মূল্যায়নের জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন।
আরএসএফ ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে
এদিকে, আরএসএফ সুদানে ঈদের আগেই ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, ভারত সহ অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে, সুদানে উপস্থিত ভারতীয় নাগরিকরা জানিয়েছেন যে যুদ্ধবিরতির মধ্যেও সুদানের একাধিক শহর থেকে বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ আসছে। সবাই আতঙ্কে ঘরে ও নিরাপদ স্থানে বসে আছেন।
সূত্রের মতে, সুদানের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনোউচ্ছেদ অভিযান চালানো চ্যালেঞ্জিং। এর প্রধান কারণ সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান ভয়াবহ সংঘর্ষ, এমনবস্থায় বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়ে আসা রীতিমত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে যখন তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার কেউ নেই।
এদিকে, ভারতও রাষ্ট্রসংঘ এবং আমেরিকা, সৌদি আরব, ব্রিটেন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, মিশর সহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুদানের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে যোগাযোগ রেখে চলেছে। সংঘর্ষের সময় দূতাবাসগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে বিদেশ মন্ত্রক নিশ্চিত করেছে যে সমস্ত ভারতীয় কূটনীতিক নিরাপদ রয়েছেন এবং সেখানে আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।