করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে মাত্রাছাড়া সংক্রমণ দক্ষিণের রাজ্য কেরলে। প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যজুড়ে। তবে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমিতদের উপর টানা ১০ দিনের একটি সমীক্ষা চালিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। সেই তথ্য বলছে, কেরলে দৈনিক আক্রান্তের ৬০ শতাংশেরই করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া রয়েছে।
তথ্যটিতে দেখা যাচ্ছে, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কেরলে মোট ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭২৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২ লক্ষ ৪০ হাজার ৭৪৫ জনেরই করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ ৬০.৬৮ শতাংশ সংক্রমিতই ডাবল ডোজের টিকা নিয়েছিলেন।
এঁদের মধ্যে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৬১৭ জন অথবা ৮৮ শতাংশ সংক্রমিত টিকা নেওয়ার জন্য যোগ্য ছিলেন। টিকা দেওয়ার জন্য যোগ্য ৬৮.৬৬ শতাংশই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ পেয়েছেন। যেখানে ১৯ হাজার ৬৩৬ জন অর্থাৎ ৫.৬ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজটি পেয়েছেন। বাকি ৯০ হাজার ২৩৬ জনের টিকা নেওয়ার ইতিহাস নেই।
আরও পড়ুন- একধাক্কায় ২ লক্ষের নীচে সংক্রমণ, উদ্বেগ বাড়াল একদিনে হাজারের বেশি মৃত্যু
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যত বেশি মানুষ করোনার টিকা নেবেন ততই টিকা নিয়েও সংক্রমিত হয়ে পড়ার সংখ্যা বাড়বে। সম্প্রতি ওই বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপট অত্যন্ত জোরালো। টিকা নেওয়া থাকলেও সহজেই অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্বশেষ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কেরলেই ১৮ বছরের বেশি বয়সী যোগ্য প্রত্যেককে করোনা টিকার প্রথম ডোজ এবং যোগ্য জনসংখ্যার ৮৪ শতাংশকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যে ইতিমধ্যেই ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৭১ শতাংশ কিশোর-কিশোরীকে করোনা টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য কর্মী ডাঃ এন এম অরুণ কেরলের করোনা পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ''টিকা নেওয়ার পরেও একটি বড় অংশের মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। গবেষণা প্রমাণ করে যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট টিকা থেকে অনাক্রম্যতা এড়ায়। বর্তমান ঢেউয়ে সক্রিয় রোগীদের মাত্র ৩ শতাংশের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়েছে। কারণ, সংক্রমিতদের মধ্যে হালকা লক্ষণ রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টিকাকরণ সংক্রমণের প্রভাব কমিয়েছে। যেহেতু ভ্যাকসিনেশন কভারেজ বাড়ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগামী দিনে টিকা নিয়েও সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা আরও দেখা যাবে।''
Read story in English