মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্যে আগুনে ঘি পড়ছে। ফলে ঝুঁকি নিতে নারাজ দিল্লি পুলিশ। বুধবারই নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দাল, সাবা নাকভি সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। এবার এফআইআর হল এআইএমআইএম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি এবং হিন্দুত্ববাদী নেতা যতি নরসিংহানন্দের বিরুদ্ধেও।
মহানবীকে নিয়ে টিভি শো-তে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে উত্তাল অবস্থা। বিদেশে মাথা কাটা যাচ্ছে মোদী সরকারের। দেশের মাটিতেও তরজা জারি। দেশবাসীর একাংশ যখন সাসপেন্ডেড বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মাদের বিরোধীতায় সোচ্চার, তখন অনেকেই আবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই ইস্যুতে আগেই মুখ খুলেছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন ওয়েইসি। তাঁর দাবি, 'নূপুর শর্মারবিরুদ্ধে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলি আপত্তি তোলার পরই পদক্ষেপ করা হল। অছত ভারতীয় মুসলিমরা যখন ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছিল, তখন কোনও পদক্ষেপই করা হল না।' তাঁর প্রশ্ন, 'প্রদানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে কেউ বিরূপ মন্তব্য করলেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি ওটায় বিজেপি। তাহলে এখন কেন নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালদের গ্রেফতার করা হবে না?'
অন্যদিকে, প্রকাশ্যেই নূপুর শর্মাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্দুত্ববাদী নেতা যতি নরসিংহানন্দ। দাবি করেছেন, নুপুর শর্মারা হজরত মহম্মদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ঠিক কথা বলেছেন। এবং নূপুরদের কথা বোঝাতে তিনি নিজে জামা মসজিদেও যাবেন। আর সঙ্গে নিয়ে যাবেন কোরান এবং ইসলামিক সাহিত্যের বিভিন্ন বই। এছাড়াও তাঁর সাফ কথা, কোনও এক জুম্মাবার (শুক্রবার) তিনি দেশের সবচেয়ে বড় মুসলিম প্রার্থনাকেন্দ্রে যাবেন।
আরও পড়ুন- সমর্থন মিললেও মুখ পুড়ছে ভারতের, নূপুর-নবীন-সাবা সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ শাহর পুলিশের
কেন শুক্রবার? ব্যাখায় নরসিংহানন্দ জানিয়েছেনযে, ওই দিনটিতে মসজিদে বহু মুসলিম মৌলবি ভিড় করেন। তাঁদেরকে তিনি বোঝাবেন যে নুপুর শর্মা হজরত মহম্মদ সম্পর্কে ঠিক কথাই বলেছেন।
এই হিন্দুবাদী নেতার হুঁশিয়ারিতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। একই অভিযোগ এআইএমআইএম প্রধানের বক্তব্য ঘিরেও।
এরপরই ওয়েইসি ও নরসিংহানন্দ বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল দিল্লি বিজেপির মিডিয়া বিভাগের বহিষ্কৃত প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল, সাংবাদিক সাবা নকভি সহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন হিন্দু মহাসভার কর্তা পূজা শাকুন পাণ্ডে, রাজস্থানের মৌলানা মুফতি নাদিম এবং পিস পার্টির প্রধান মুখপাত্র শাদাব চৌহান। সাসপেন্ডেড বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মা এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধেও দ্বিতীয় এফআইআরটি নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই আটজনের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়া পোস্ট দ্বারা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে পুলিশের অভিযোগ।