ভারতীয় অর্থনীতি: মাত্র ১% ধনকুবেরের কাছে দেশের সম্পদের মোট ৪০% রয়েছে, সামনে এল অক্সফ্যামের রিপোর্ট। অক্সফাম রিপোর্ট ভারতে ধনী এবং দরিদ্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান সম্পর্কে একটি নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে। চাঞ্চল্যকর বিষয় উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মাত্র ১০ জন ধনী ব্যক্তির ওপর যদি ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়, সেই টাকাতেই আগামী তিন বছর শিশুদের শিক্ষার ব্যায়ভার উঠে আসবে। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ভারতের ধনকুবেররা যদি তাদের সম্পূর্ণ সম্পদের উপর একবার মাত্র ২% কর দেন তবে আগামী তিন বছরের জন্য ভারতে অপুষ্টির শিকার মানুষের পুষ্টির জন্য ৪০,৪২৩ কোটি টাকার প্রয়োজন মেটাবে। শুধু তাই নয়, রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে ২০২২ সালে, ভারতে বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬৬, যেখানে ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১০২।
ভারতে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে আগের থেকেও বেশি। অক্সফ্যামের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অক্সফ্যাম তাদের নতুন প্রতিবেদনে বলেছে যে ভারতে সবচেয়ে ধনী এক শতাংশের কাছে রয়েছে এখন দেশের মোট সম্পদের ৪০ শতাংশেরও বেশি। অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে ভারতের ১০ জন ধনকুবেরের ওপর মাত্র ৫ শতাংশ কর আরোপ করলে স্কুলছুট পড়ুয়াদের তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সম্পূর্ণ অর্থের প্রয়োজন মেটাবে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই- জানিয়েছে, রিপোর্টে বলা হয়েছে যে শুধুমাত্র একজন বিলিয়নেয়ার গৌতম আদানি ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে লাভের উপর কর আরোপ করে ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা আসবে যা এক বছরের জন্য ৫০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের জন্য যথেষ্ট। ‘সার্ভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ভারতের বিলিয়নেয়ারদের যদি তাদের সম্পূর্ণ সম্পদের উপর একবার ২ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হয়, তাহলে তা আগামী তিন বছরের জন্য দেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা কমিয়ে দেবে। অপুষ্টির শিকার মানুষের পুষ্টির জন্য ৪০,৪২৩ কোটি টাকার প্রয়োজন মেটাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ২০২২-২৩ সালের জন্য দেশের ১০ জন ধনকুবেরের উপর ৫ শতাংশ এককালীন করের পরিমাণ (১.৩৭. লক্ষ কোটি টাকা), স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং আয়ুশ মন্ত্রকের আনুমানিক তহবিলের চেয়ে যা প্রায় দেড় গুণ বেশি। একই সময়ে, অক্সফাম বলেছে যে ভারতে মোট বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ২০২০ সালে ১০২ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ১৬৬ হয়েছে।
উপার্জনের পরিপ্রেক্ষিতে লিঙ্গ বৈষম্যেকেও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। তফসিলি জাতি এবং গ্রামীণ কর্মীদের মধ্যে পুরুষ-মহিলাদের আয়ের পার্থক্য অনেকটাই বেশি । অক্সফ্যাম আরও বলেছে যে করোনা অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ভারতে ধনকুবেরদের সম্পদ প্রকৃত অর্থে ১২১ শতাংশ বা প্রতিদিন ৩৬০৮ কোটি টাকা বেড়েছে।