এই মুহুর্তে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের একটাই নাম করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানমহলে যার পরিচিতি কোভিড-১৯ ভাইরাস হিসেবে। একশ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও রোগ পৃথিবীকে আক্রান্ত করেছে। মৃত্যুমিছিলে জেরবার হচ্ছে মানব সভ্যতা। অতএব ঠেকাতেই হবে ভাইরাসের দাপট। একের পর ভ্যাকসিন বের করতে যখন মরিয়া গবেষকরা সেই সময় লন্ডনে শোনা গেল আশার কথা। মেডিসিনমহলে জনপ্রিয় ব্যথানাশক আইবুপ্রফেন-কে করোনা মোকাবিলায় ট্রায়াল রান করিয়েছে ব্রিটেনের সেন্ট থমাস এবং কিংস কলেজের একদল গবেষক।
আইবুপ্রফেন পেইনকিলার (ব্যথানাশক) এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ (ক্ষতনাশক) হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় চিকিৎসা জগতে। সংবাদসংস্থা বিবিসি জানিয়েছে ওষুধের এই গুণটিকেই এবার কোভিড লড়াইয়ে কাজে লাগাতে চাইছেন লন্ডনের গবেষকরা। সংশ্লিষ্টমহল আশা করছে যে এর ট্রায়াল যদি সুস্থ করতে সফল হয় তাহলে অনেক কম খরচায় করোনা মোকাবিলা করতে পারবে বিশ্ব। ভেন্টিলেটরের মতো দামী ব্যবস্থারও বিশেষ প্রয়োজন হবে না।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে করোনা যেভাবে মানব শরীরে বাসা বাঁধছে সেখানে এই তথাকথিত পেইনকিলার কাজ করবে কীভাবে। মনে রাখতে হবে কোভিড ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করেই প্রথমে দখল করে আমাদের ফুসফুস। ফলে কাশি আর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা শুরু হয়। আর আইবুপ্রফেন তো তাঁদেরকেই দেওয়া হয় যারা দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। সেই মর্মেই প্রথমে প্রাণীদের উপর এর ট্রায়াল করা হয়। সফলতা এসেছে সেখানে।
আরও পড়ুন, ভারতে সংক্রমিত করোনাভাইরাস অনেক দুর্বল, পাওয়া গেল নয়া বৈশিষ্ট্য
আর এরপরেই ২৩০ জন রোগীর মধ্যে অর্ধেকের দেহে এই আইবুপ্রফেনের একটি স্পেশাল ফর্মুলেশন প্রয়োগ করা হয় ট্রায়াল পদ্ধতি হিসেবে। বাজারে যে আইবুপ্রফেন পাই সেটা দেওয়া হয়নি। রোগের ধরণ ভিন্ন বলেই ওষুধেও সেটা মানা হয়েছে বলেই জানিয়েছে বিবিসি। বাকি অর্ধেক রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে যেভাবে সব দেশে কোভিড চিকিৎসা চলছে তেমনভাবে রাখা হয়। গবেষকদলের এক সদস্য প্রফেসর মিতুল মেহেতা জানান যে এই ট্রায়াল কিন্তু সেই সব রোগীদের দেহে করা হয়েছে যাদের অবস্থা স্থিতিশীল এবং অপেক্ষাকৃত কম সংক্রামক অবস্থা।
তবে এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পরই ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন যে আদেও করোনায় হালকা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যাদের দেহে তাঁরা এই ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন কি না। যেহেতু এই ওষুধের কার্যকলাপ করোনার ক্ষেত্রে এখনও ট্রায়াল পদ্ধতিতে রয়েছে। তবে এরপরই কোভিডে আইবুপ্রফেনের ব্যবহার করা নিয়ে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা যে নির্দেশ জারি করেছিল তা প্রত্যাহার করে।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন