পুলওয়ামাকাণ্ডের জেরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রীতিমতো কোণঠাসা পাকিস্তান হাফিজ সইদের জমাত-উদ-দাওয়া এবং ফালাহ-ই-ইনসানিয়তের উপর নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনল। মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ রাষ্ট্রসংঘের কালো তালিকাভূক্ত জঙ্গি। হাফিজের জামাত-উদ-দাওয়ারই প্রকাশ্য সংগঠন ফালাহ-ই-ইনসানিয়ত।
উল্লেখ্য, পাক সংবাদমাধ্যম 'ডন'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিক জঙ্গি সংগঠনের তালিকা অনুযায়ী পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মামনুন হোসেন একটি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করেন। এর মাধ্যমেই নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায় ঠাঁই পায় জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফালাহ-ই-ইনসানিয়ত। কিন্তু, কিছুদিন আগেই পাক রাষ্ট্রপতির সেই অধ্যাদেশের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় দেশের 'নিষিদ্ধ' সংগঠনের তকমা থেকে মুক্তি পায় হাফিজ সইদের এই দুই দল। এবার, পাকিস্তানের বর্তমান পিটিআই সরকারের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক দুই সংগঠনকেই ফের 'নিষিদ্ধ' ঘোষণা করল।
জানা যাচ্ছে, এই দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির (এনএসসি) যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং পাক প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই প্রধান ইমরান খান। ইমরান ছাড়াও ওই বৈঠকে ছিলেন পাক সেনা প্রধান কামর জাভেদ বাজওয়া, বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি-সহ আইএসআই এবং সেনা গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ কর্তারা। এনএসসি-র বৈঠক মিটতেই পাক অভ্যন্তরীণমন্ত্রক বিবৃতি জারি করে জানায়, "নিষিদ্ধ সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কার্যকারী ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে...জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফালাহ-ই-ইনসানিয়তের উপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক"।
প্রসঙ্গত, ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর উপর আইইডি বিস্ফোরণের পরই পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে দিল্লি। আন্তর্জাতিক স্তরে ইসলামাবাদকে এক ঘরে করার জন্যও কোমর বাঁধে নর্থ ব্লক। এরপরই প্রকাশ্যে বার্তায় পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানান, ভারত আঘাত করলে, পাকিস্তানও প্রত্যাঘাত করবে। এরপরই বৃহস্পতিবার তিনি পাক সেনাকে 'ফ্রি হ্যান্ড' দিয়ে বলেন, ভারত কোনও রকম আগ্রাসন দেখালে, যোগ্য জবাব দিতে হবে। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেদিনই হাফিজ সইদের জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফালাহ-ই-ইনসানিয়তের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিল ইমরান সরকার।
Read the full story in English