সিন্ধু নদের অববাহিকার তিন পূর্ব প্রবাহিণী নদীর জল ভারত নিজের অংশের পাঞ্জাব এবং জম্মু কাশ্মীরের দিকে ঘুরিয়ে দিলে তাদের "কোনও মাথাব্যথা বা আপত্তি নেই" বলে জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। সেদেশের সংবাদপত্র 'ডন' জলসম্পদ মন্ত্রী খোয়াজা শুমাইলকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ওই তিন নদীর জল, যা শেষমেশ পাকিস্তানেই প্রবেশ করে, তা নিয়ে পাকিস্তানের কোনও বক্তব্য নেই। "ভারত ওই তিন নদীর জল নিয়ে যাই করুক, দেশের মানুষকে সরবরাহ করুক বা অন্য কোনও কাজে লাগাক, আমাদের কোনও মাথাব্যথা বা আপত্তি নেই, কারণ সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি তাদের সেই অধিকার দিয়েছে।"
মন্ত্রীর আরও বক্তব্য, "আসল কথা হলো ভারত রাভি (ইরাবতী) নদীর অববাহিকায় শাহপুরকান্দি বাঁধ প্রকল্প শেষ করতে চায়, যা ১৯৯৫ সাল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এখন ওরা এই বাঁধ তৈরির কাজ শেষ করে নিজেদের ভাগের জল ব্যবহার করতে চায়, যা এমনিতে অব্যবহৃত অবস্থাতেই পাকিস্তানে ঢুকে যায়। কাজেই ওরা যদি এই জল বাঁধ দিয়ে জমিয়ে রাখতে চায় বা নিজেদের কাচজে লাগাতে চায়, তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।"
আরও পড়ুন: পুলওয়ামার জের: সিন্ধু জল বণ্টন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ভারতের
বৃহস্পতিবার ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী নীতিন গড়কারি বলেছিলেন, ভারত সরকার ইরাবতী (রাভি), শতদ্রু (সাটলেজ) এবং বিপাশা (বিয়াস) নদীর জল জম্মু কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানে এদের জল ঢোকা "বন্ধ" করে দেবে। বাস্তবে, ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি অনুসারে এই নদীগুলির জলের ওপর এমনিতেই ভারতের পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রী শুমাইল কিন্তু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিম প্রবাহিণী নদীগুলির জল যদি ভারত ঘুরিয়ে দেওয়ার বা ব্যবহার করার চেষ্টা করে, তাহলে পাকিস্তানের বিস্তর আপত্তি থাকবে। "যদি ওরা পশ্চিমদিকে বওয়া নদীর (চন্দ্রভাগা, সিন্ধু, বিতস্তা) জল ব্যবহার করার বা ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা অবশ্যই উদ্বিগ্ন হব এবং কড়া আপত্তি জানাব," বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতি ঘটেছে। ওই হামলায় মৃত্যু হয় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের, যার দায় স্বীকার করে নেয় পাকিস্তানে অবস্থিত জঙ্গি সংগঠন জৈশ-এ-মহম্মদ। হামলার পর থেকে ভারত একের পর এক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের সাহায্যে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক স্তরে একঘরে করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।